বিমাখাতেও বাধ্যতামূলক হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র এবং কেওয়াইসি (know your customer) ফরম পূরণের বাধ্যতামূলক বিধান বিমাখাতেও চালু করা হচ্ছে। কালো টাকার বিনিয়োগ বন্ধে এই উদ্যোগ নিচ্ছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ পলিসি করতে জাতীয় পরিচয়পত্রের পাশপাশি কেওয়াইসি ফরম পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে।

বিমাখাতে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বিনিয়োগের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থের বিনিয়োগ বন্ধে বিনিয়োগকারীদের অর্থের উৎস সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। একই সঙ্গে ব্যাংকের মতো আমানতকারীদের বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণের জন্য বিমা কোম্পানিগুলোকে পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।

প্রয়োজনীয় কাগজ হিসেবে গ্রাহক পরিচিতির জন্য নো ইউর কাস্টমার (কেওয়াসি) ফরম পূরণ, জাতীয় পরিচয়পত্র, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) এবং আমানত বা বিনিয়োগের উৎস সর্ম্পকে প্রমাণের দলিলাদি রাখতে হবে।

সম্প্রতি বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইআরডিএ) কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে বিমাকারীর কাছ থেকে উল্লেখিত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে বলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

চিঠিতে বলা হয়েছে, অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং খাতের মতো বিমাখাতে প্রচুর পরিমাণে অর্থ জমা-বিনিয়োগ করছে, যা আমরা সম্প্রতি লক্ষ্য করেছি। কিন্তু কেওয়াসি ফরম, জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন এবং অর্থৈর উৎস সর্ম্পকে কোনো তথ্য নেই। ফলে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

এর জন্যই দুদক কেওয়াইসি ফরম, জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন এবং অর্থের উৎস সর্ম্পকিত নথি সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছে।

বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, পুরো আর্থিক খাতের জন্য ই-কেওয়াইসি ফরম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আমি শুনেছি, আইডিআরএ এই নথি সংগ্রহ করতে বিমাখাতের জন্য নীতিমালা তৈরি করছে, বিমাকারীরা অবশ্যই নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা মেনে পলিসি করবে।

আমানতকারীদের টিআইএন সার্টিফিকেট সংরক্ষণের বিষয়ে শেখ কবির হোসেন বলেন, বিমা ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের জন্য বৈধভাবে অর্থ উপার্জন হওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে কেবল বড় বিনিয়োগকারীদের নথিপত্র যাচাই করা হয়। আমি মনে করি যে, সবার আয়ের উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান করা দরকার। বিমা সংস্থাগুলো পলিসিধারীদের তহবিলের বৈধতা যাচাই করতে সক্ষম হবে না। তবে বিনিয়োগের মেয়াদ শেষে চেকের মাধ্যমে যখন অর্থ ফেরত দেয়া হবে সেখান থেকে সরকার তাদের আয়ের বৈধতা পরীক্ষা করতে পারে।

দেশে বর্তমানে ৭৬টি বিমা কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ও জীবন বীমা কর্পোরেশন নামে দুটি সরকারি বিমা কোম্পানি।

/এন এইচ