প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে
বিভিন্ন দেশে ঈদ উদযাপনের রীতি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ পবিত্র হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতার পর সারা বিশ্বে শুরু হয় ঈদ-উল-আযহার উৎসব। একেক দেশে একেক নামে ও একেক ঢঙে পালন করা হয় এই ঈদ। বিশ্বের নানা দেশে এই ঈদের পালন রীতি নিয়েই চলুন হয়ে যাক কিছু কথা।
বাংলাদেশঃ এই দেশে ঈদ-উল-আযহাকে ‘কোরবানি ঈদ’ ও বলা হয়ে থাকে। ঈদের এক মাস আগে থেকেই বিভিন্ন দোকানপাটে কেনাকাটা শুরু হয়ে যায়। কোরবানির পশু হিসেবে বাছাই করে নেয়া হয় গরু, ছাগল বা মহিষ। এছাড়া কিছু কিছু উটও কোরবানি দিতে দেখা যায়। এসব উট বিশেষত কোরবানির ঈদকে সামনে রেখেই আমদানি করা হয়ে থাকে। ঈদের নামাজের পরপরই শুরু হয়ে যায় কোরবানির সব কার্যক্রম। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলে কোরবানির সব আয়োজন। সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় তিন দিন ব্যাপী চলে ঈদ-উল-আযহার উৎসব।
সৌদি আরবঃ ঈদ-উল-আযহার মৌসুমে সারা বিশ্বের লাখো মুসল্লি একত্র হন এই দেশটিতে হজ্জ্ব পালনের উদ্দেশ্যে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা মুসলিমদের সাদরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভিন্ন এক আঙ্গিকে সেজে ওঠে দেশটি। সৌদি আরবের নাগরিকেরা এমনিতেই সোনার জিনিস কিনতে পছন্দ করেন। আর উৎসবের এই সময়ে তারা বেশ আয়োজন করেই সোনার জিনিস কিনতে চান। তাই এই সময়টাতে সেখানে হজ্জ্ব পালন, পশু কোরবানির সাথে সাথে সোনার জিনিস বাণিজ্যের পরিমাণও বেড়ে যায়।
মিশরঃ মিশরে ঈদ-উল-আযহাকে বলা হয় ‘ঈদ-ইল-কিবর্’। ঈদের নামাজের পর থেকে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো শহর। এছাড়াও নানান ধরনের আয়োজন করা হয় পুরো দেশ জুড়ে। এই দেশের দাতব্য সংস্থাগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে গোশত বিতরণ করা হয়। এই দিনে সবাই পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সম্বোধন করে বলে, “কোল সানা ওয়া ইন্তা তায়েব”। যার অর্থ দাঁড়ায়- “আশা করি আপনার প্রতিটি বছর ভালো যাবে”।
জার্মানিঃ পৃথিবীর সকল মুসলিমের জন্য এই দেশটি ত্যাগ ও মহিমার এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। আর এই ত্যাগ এবং মহিমাই কিন্তু পবিত্র ঈদ-উল-আযহার মূল উদ্দেশ্য। ২০১৫ সালে ১ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি সিরিয়ার শরণার্থীরা জার্মান নাগরিকদের সাহায্যার্থে শান্তিময় একটি ঈদ উদযাপন করতে পেরেছিলো।
যুক্তরাষ্ট্রঃ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে কিছু আইনগত নিয়ম-কানুন থাকার কারণে সেখানে যেকোনো জায়গায় পশু কোরবানি করা সম্ভব হয় না। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা কসাইখানাতে গিয়েই ত্যাগের এই মহিমান্বিত আনুষ্ঠানিকতা পালন করে থাকে।
রাশিয়াঃ রাশিয়াতে ঈদ-উল-আযহাকে ‘কুরবান বেরাম’ বলা হয়ে থাকে। নানান ধরনের স্পেশাল মুখরোচক খাবারই এই ঈদের আয়োজনে মূল আকর্ষণ। সাধারণত কোরবানির পশু হিসেবে ছাগল বেছে নেয়া হয়। তবে গরুও কুরবানি দেয়া হয়ে থাকে। সেখানে এই ঈদ পালন করা হয় ২-৩ দিন ব্যাপী।
ইন্দোনেশিয়াঃ এই দেশের খোলামেলা জায়গাগুলোই বিশেষত ঈদের জামাতের জন্য খুব জনপ্রিয়। এই দেশে ঈদ-উল-আযহাকে ‘লেবারান হাজী’ও বলা হয়ে থাকে। ত্যাগের মূর্ত প্রতীক স্বরূপ এখানে একটি পাহাড়ের মতো জিনিস তৈরি করা হয় যাকে ‘গুনুনগান’ বলা হয়। এই পাহাড়ের মতো জিনিসটি মূলত বানানো হয় বিভিন্ন রকমের সবজি ও ফলমূল দিয়ে। নামাজের ঠিক পরপরই এই গুনুনগান থেকে সবাই সবজি ও ফলমূল খায়। বলা হয়ে থাকে, ঈদ-উল-আযহার দিনে গুনুনগান থেকে সবজি ও ফলমূল খেলে সারা বছর সুখ ও সমৃদ্ধিতে কাটে।