দেশজুড়ে
বিএনপি-পাগল রিজভী মারা গেছেন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিএনপির যে কোনও কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার ছবি গলায় ঝুলিয়ে অংশ নিতেন রিজভী হালদার ওরফে পাগলা রিজভী। নয়াপল্টন বিএনপি অফিস কেন্দ্রীক ছিলো তার পদচারণা। নেতাকর্মীদের ১০-২০ টাকায় তার খাবার জুটতো। নিজের খাবারের টাকা বাঁচিয়ে খালেদা জিয়ার জন্য ফল নিয়ে গেছেন কারাফটকে। বিএনপি-জিয়া পরিবারের জন্য তিনি ছিলেন অন্তপ্রাণ। সেই পাগলা রিজভী মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবীর খান তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
রাজধানীর যেখানেই বিএনপির কর্মসূচি হয়েছে, সেখানেই দেখা মিলেছে এই পাগলা রিজভীর। কখনো কাফনের কাপড়ে শরীর মুড়ে, কখনো আবার ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ বা ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার চাই’ ‘জেলে নিলে আমায় নে, আমার মাকে মুক্তি দে’ এমন সব ব্যানারে নিজেকে মুড়িয়ে, কখনো শরীরে এঁকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন তিনি।
গত বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর কয়েকদিন না খেয়ে টাকা জমিয়ে ফল নিয়ে কারাফটকে যান রিজভী। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কারাফটকে অবস্থান করেন। এছাড়া বিএনপি নেত্রীর মুক্তির দাবিতে কাফনের কাপড় পড়ে বিভিন্ন সভা সমাবেশে অবস্থান নেন।
শায়রুল কবির বলেন, আমাদের দলপাগল রিজভী হাওলাদার ইন্তেকাল করেছেন। তার লাশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে ছিলো মধ্যরাত পর্যন্ত। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের দপ্তরের দায়িত্বে থাকা আবদুুস সাত্তার পাটোয়ারীসহ অন্য নেতারা খবর শুনে সেখানে ছুটে আসেন।
সাত্তার পাটোয়ারী জানান, শনিবার চিকিৎসার জন্য কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসাপাতালে যান রিজভী। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যেতে বলা হয়। ঢামেক থেকে তিনি নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আসছিলেন। কার্যালয়ের সামনে এসে রিকশা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় তার।
তিনি বলেন, রাত দেড়টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে রিজভী হাওলাদারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল এবং আমিসহ অন্যরা সেখানে ছিলাম। জানাজা শেষে রাতেই তার লাশ বাউফলের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
রিজভী হাওলাদারের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ছোট্টকান্দা গ্রামে। তার বাবার নাম আজহার হাওলাদার। নারায়ণগঞ্জের কুতুবপুরে থাকেন তিনি। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
প্রতিদিন ভোরে বিএনপি কার্যালয়ে আসতেন রিজভী হাওলাদার। সন্ধ্যার পর আবার নারায়ণগঞ্জ ফিরে যেতেন। কিন্তু গতকাল তার আর পরিবারের কাছে আর ফেরা হলো না।
/আরএম