জীবন-যাপন
বাসর রাতে বিড়াল মারার আসল কাহিনী জেনে নিন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বাসর রাতে বিড়াল মারার কথা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু এটা দিয়ে কী বোঝানো হয় তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। জানিনা এর ইতিহাস। চলুন জেনে নেই কোথা থেকে এর প্রচলন হয়েছে।
একসময় বাগদাদে এক বাদশাহ ছিলেন। তার ছিল দুই রাজকন্যা। কিন্তু কোন ছেলে ছিল না। ওই দুই রাজকন্যা ছিল বাদশা এর অনেক অনেক আদরের। সবসময় দুই রাজ কন্যার জন্যে দশ পনেরো জন দাসী প্রস্তুত থাকতো। দুই রাজকন্যার দুটি বিড়াল ছিলো। বিড়াল দুটো ছিলো তাদের সবসময় এর সাথী। তারা খেতে বসলে এমনকি ঘুমাতে গেলেও ঐ বিড়াল দুটো সাথে সাথে থাকত।
তো দেখতে দেখতে দুই রাজকন্যার একসময় বিয়ের বয়স হয়ে গেল। বাদশাহর চিন্তা বাড়তে লাগল। কারণ এই দুই রাজকন্যার জামাইদের উপরেই তার এই বিশাল রাজ্যের দায়িত্ব দিয়ে যেতে হবে। সুতারাং এমন যোগ্য দুজন ছেলে খুঁজে বের করতে হবে। যারা এই গুরু দায়িত্ব ভালো ভাবে পালন করতে পারবে। সারা রাজ্যে অনেক খোজাখুজি করে এমন দুইভাই পাওয়া গেলো যাদের কাছে রাজকন্যাদের বিয়ে দেয়া যায় বলে বাদশাহ এর মনে হল। তারপর অনেক ধুমধাম করে বিয়ে হল দুই রাজকন্যার একসাথে।
অতঃপর বাদশাহ দুই মেয়ে জামাইকে সমান ভাবে রাজ্যের দায়িত্ব ভাগ করে দিলেন। এরপর দুই ভাই রাজ্য চালনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলেন।
দীর্ঘদিন পর রাজ্যের বড় একটি অনুষ্ঠানে দুই ভাইয়ের দেখা হলো। দুইজনই আবেগে আপ্লুত হয়ে পরলেন। তারপর অনেক কথায় কথায় ছোট ভাই জিজ্ঞাসা করলেন তাদের বৌ মানে রাজকন্যাদের কথা। তখন বড় ভাই বললেন, বড় রাজকন্যা তাকে অনেক সমীহ করে চলে। তার কোন কাজই করা লাগে না। ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব শুনে ছোটভাই বললেন ছোট রাজকন্যা তার কোন যত্নই করে না। সবসময় রাগারাগি করে এমনকি মাঝে মাঝে গায়েও হাত তুলে। তখন বড় ভাইকে জিজ্ঞাসা করল কিভাবে রাজকন্যাকে বশ করা হল? বড় ভাই এবার রাজকন্যার বিড়ালের কথা জিজ্ঞাসা করলো।
ছোট ভাই বলল হ্যাঁ ওই বিড়ালকে তো আমার চাইতেও বেশি যত্নে রাখে। বড়ভাই বলল, প্রথম দিন বাসর রাতে ঘরে ঢুকেই আমি একটা তরবারি দিয়ে ওই বিড়ালের ওপরে দিলাম এক কোপ। ব্যাস একবারে দুইভাগ। এই ঘটনায় বড় রাজকন্যা ভাবলো আমি মনে হয় অনেক বড় কোন বীর, এরপর থেকেই সে আমাকে অনেক সমীহ করে চলে।
তো এই কথা শুনে ছোটভাই মনে মনে ভাবলো ঠিক আছে আজকে বাড়ী ফিরেই বিড়ালের জীবননাশ করা লাগবে। তারপরে আবার অনেকদিন পরে দুই ভাই এর দেখা হলো। এবার ছোট ভাইয়ের শরীরে অনেক কাটা দাগ। বড়ভাই জিজ্ঞাসা করলেন, কি খবর কোন যুদ্ধে আহত হয়েছিলে নাকি? ছোটভাই বললেন, না ভাই তোমার ঘটনা শুনে আমি ওইদিন রাজ্যে ফিরে অন্দরমহলে ঢুকে তরবারি নিয়ে এক কোপে বিড়ালটাকে দুইভাগ করে দিলাম। কিন্তু আমার বেলায় ঘটনা উল্টো হল।
আমাকে এর শাস্তি সরূপ একমাস কারাবন্দি আর অত্যাচার ভোগ করতে হয়েছে। তখন বড়ভাই বললেন, বিড়াল বাসর রাতেই মারতে হয়, পরে মারলে কোন লাভ নাই। এই হলো বাসর রাতে বিড়াল মারার কাহিনী
/আরএম