প্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
বাজেটে প্রত্যন্ত এলাকার জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি
সুপেয় পানি ও নিরাপদ স্যানিটেশন সেবা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ও নিরাপদ স্যানিটেশন সেবা নিশ্চিতে প্রত্যন্ত এলাকা, চর, পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের তুলনায় আগের অর্থবছরগুলোয় শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ তহবিল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অথচ অনুন্নত এসব এলাকায় বরাদ্দের প্রয়োজন শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি। তাই আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রান্তিক এলাকাগুলোয় বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি), ইউনিসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল অ্যান্ড ওয়াটার পোভার্টি, এমএইচএম প্লাটফর্ম, ইউনিসেফ ও ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে পিপিআরসির চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান ও পিপিআরসির সিনিয়ির ফেলো মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদসহ ওয়াশসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মীরা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তারা সঠিক এডিপি প্রকল্প নির্বাচনে মনোযোগী হওয়া এবং গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াশ বিষয়ে বরাদ্দের ব্যবধান কমানোর প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
ওয়াটারএইডের সহযোগিতায় পিপিআরসির বিশ্লেষণের তথ্য উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, এডিপির মোট বরাদ্দ হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের ওয়াশ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এসব এলাকায় বরাদ্দ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পাঁচ বছর আগের তুলনায় ৭২ শতাংশ কমেছে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ৯৮ শতাংশ জনসংখ্যার জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা ও খোলা স্থানে মলত্যাগ নির্মূলের মাধ্যমে ওয়াশসম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করে এসডিজির লক্ষ্যগুলো আরো চ্যালেঞ্জিং। বিগত বছরগুলোয় বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্থানিক বৈষম্যের বিষয়টি বিভিন্নভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তনই হচ্ছে না।
ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান তার বক্তব্যে বলেন, টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ও নিরাপদ স্যানিটেশন সেবা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ। এসডিজি অর্জনে এগিয়ে যেতে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ। যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে। এক্ষেত্রে এসডিজি ছয় অর্জনে সরকারকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের কাছে পৌঁছানোর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের জন্য কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এসডিজি ৬.১.১ ও এসডিজি ৬.২.১ অর্জন নিশ্চিতে বরাদ্দ বাস্তবায়নে মানসিকতার পরিবর্তন ও কার্যকর এডিপি প্রকল্প নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা, প্রত্যন্ত এলাকায় বরাদ্দ বাড়ানো ও আন্তঃশহর বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা, ওয়াশ খাতে এডিপি বরাদ্দের আরো কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের সমাধান, হাইজিনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য শুধু বৈশ্বিক মহামারী নিয়ন্ত্রণেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে না, পাশাপাশি কভিড-পরবর্তী বাস্তবতায় নগরে স্বাস্থ্য, স্কুলে স্বাস্থ্য ও নারীদের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা, যেসব এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়বে সেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ওয়াশের সুবিধা নিশ্চিত, সবশেষে শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ বাজেট বৃদ্ধিতে বিনিয়োগের করার সুপারিশ করা হয়েছে।