দেশজুড়েশিক্ষা-সাহিত্য
‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ ব্যবহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলন
আতিকুর রহমান, বাকৃবি প্রতিনিধি: আমাদের দেশের কৃষকরা মাটিতে সারের চাহিদা না জেনেই অনুমান করে জমিতে সার প্রয়োগ করে থাকেন। এতে মাটির উর্বরতা যেমন কমে যায় তেমনি ধানের ফলনও আশানুরূপ হয় না। তবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ কর্তৃক উদ্ভাবিত ‘মাটি পরীক্ষণ যন্ত্র’ বা ‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ ব্যবহার করে মেট ফলনের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে ময়মনসিংহের সুতিয়াখালী গ্রামে ‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ ব্যবহার করে আমন ধানে সারের মাত্রা নির্ধারণ ও এর সুফল সম্পর্কে কৃষক, সম্প্রসারণ ও গবেষকদের এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার দাতা সংস্থা এসিআইএআর এবং বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ধান সহ অন্যান্য ফসলের পরিমিত মাত্রায় সার ব্যবস্থপনার উপর একটি প্রকল্প (নিউম্যান) পরিচালনা করা হয়। প্রকল্পের একটি অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ সদরের সুতিয়াখালী গ্রামের ৬ জন কৃষকের জমিতে পৃথকভাবে ৬টি পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকদের নিজস্ব চাষ পদ্ধতির চেয়ে অন্যান্য পদ্ধতিতে ফলন ভালো হয়েছে। তবে ‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ ব্যবহার করে কৃষকরা কম খরচে ও কম সময়ে মাটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করে বেশি লাভবান হয়েছেন।
প্রকল্পের আওতায় থাকা কৃষক কামরুল হাসান বলেন, আমরা আগে মাটি পরীক্ষা না করেই সার দিতাম। কিন্তু এবার ‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ দিয়ে মাটি পরীক্ষা করে সার দিয়ে আমরা আগের চেয়ে ফলন ভালো পেয়েছি।
প্রকল্পের পিআই ও বাকৃবির কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জহির উদ্দিন বলেন, ‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ এর মাধ্যমে মাটিতে কী পরিমাণ সার দিতে হবে তা খুব সহজেই জানা যায়। কৃষক মাঠে থেকেই এ পরীক্ষা করতে পারবে। মাটিতে পুষ্টি কম থাকলে সার বেশি দিতে হবে। একারণে সারের খরচ বাড়লেও ফলন বেশি হওয়ায় লাভ বেশি হবে। ‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ ব্যবহার করে আগের চেয়ে বিঘাপ্রতি ২মণ ফলন বাড়ে ও দেড় হাজার টাকা লাভ হয়েছে কৃষকদের।
সভায় বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় আপনারা ‘বাউ সয়েল টেস্টিং কিট’ ব্যবহার করবেন। এতে আপনারা যেমন লাভবান হবেন তেমনি দেশ ও জাতি লাভবান হবে।
মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. জহির উদ্দিন, প্রকল্প সম্বন্বয়কারী ড. মো এনামুল হক, অধ্যাপক ড. মো. এম. আর. জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক ড. মো. ওয়াকিলুর রহমান, ড. মো. আব্দুস সাত্তার, ড. মো. বখতিয়ার হোসেন ও এলাকার অর্ধশত কৃষক।
#এমএস