দেশজুড়ে
বাংলাদেশ সীমান্তে আটকা পড়েছে কয়েক হাজার ভারতীয় নাগরিক
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাগুলিতে কয়েক হাজার ভারতীয় নাগরিক আটকা পড়ে আছেন। এরা মূলত পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এবং বাংলাদেশে কাজ করতেন।
বিশেষ পারিবারিক প্রয়োজন এবং অসুস্থতার মতো কারণ ছাড়া স্থল সীমান্ত দিয়ে এখনও ভারতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
আবার ঢাকা থেকে বিমানে করে বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর যে ব্যবস্থা করেছিল দিল্লি, অর্থনৈতিক কারণে এরা সেই সুযোগও নিতে পারছেন না।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বেনাপোল এবং বাংলাবান্ধা – শুধু এই দুটি সীমান্ত অঞ্চলেই প্রায় আড়াই হাজার ভারতীয় নাগরিক আটকিয়ে আছেন। এরা প্রায় সকলেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তবে অন্যান্য কয়েকটি সূত্র যা বলছে তা থেকে আন্দাজ করা যাচ্ছে যে আটকে পড়া মানুষের সংখ্যাটা আরও অনেকটা বেশি।
এরা সীমান্ত এলাকাগুলিতে কারও বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, বা কোথাও স্কুল-বাড়ির বারান্দায় কোনও মতে থাকছেন। অনেক নারীও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বেনাপোল থানার ওসি মামুন খান জানিয়েছেন, ভারতীয় ইমিগ্রেশন বিভাগ এদের গ্রহণ করছে না এখনও। নিয়মিতই এইসব আটকে পড়া মানুষ তার কাছে আসছেন, বা ফোন করছেন।
তবে এদের আটকে পড়ার কারণটা স্পষ্ট করে কোনও সরকারের তরফেই জানানো হয় নি।
বিবিসি বাংলার তরফ থেকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার — উভয়ের সঙ্গেই যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও ব্যাখ্যা দেয় নি এখনও পর্যন্ত।
কিন্তু নানা সূত্র থেকে যেটা জানা যাচ্ছে তাহলো ভারতের স্থল বন্দরগুলি দিয়ে এখনও নিয়মিত মানুষ চলাচল শুরু হয় নি, শুধু পণ্য আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে।
আবার ভারতে যেসব বাংলাদেশি নাগরিক আটকা পড়ে ছিলেন, তাদের নিজের দেশে ফিরে যেতে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ভারতে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
যদিও মে মাসের ২৪ তারিখে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, বিমানে যেসব ভারতীয় নাগরিক দেশে ফিরবেন, তাদের কী প্রোটোকল মেনে চলতে হবে।
ওই নির্দেশিকাতেই লেখা আছে যে স্থল-সীমান্ত দিয়ে যারা আসবেন, তাদেরও একই প্রোটোকল মেনে আসতে হবে।
নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও কেন এই কয়েক হাজার ভারতীয় সীমান্ত এলাকাগুলিতে আটকে আছেন, সেটা স্পষ্ট নয়।
দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে আটকে থাকার ফলে ভারতীয়দের খাবার যোগাড় করতেও সমস্যা হচ্ছে। হাতে সেরকম অর্থও বিশেষ নেই অনেকের। স্থানীয়ভাবেই কিছু খাবারদাবার হয়তো তারা যোগাড় করছেন এখনও, কিন্তু এভাবে আর কতদিন চালাতে পারবেন, তা অনেকেই জানেন না।
আবার সামনে আসছে কোরবানির ঈদ। বাংলাদেশে বেশ কয়েকদিন দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। সেই সময়ে কীভাবে খাবার দাবার যোগাড় করা যাবে, সেটা অনিশ্চিত। তবে কিছু চাল, ডাল তেল লবণ এসব পাঠানোর বন্দোবস্ত করছেন ঢাকার কয়েকজন সমাজকর্মী। খবর বিবিসি বাংলার।
/আরএম