শিল্প-বানিজ্যশেয়ার বাজার
বাংলাদেশে শক্তিশালী বাজার দেখছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সরাসরি বিনিয়োগের অত্যন্ত অনুকূল পরিবেশের পাশাপাশি বাংলাদেশকে শক্তিশালী ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে দেখছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগও ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে নিক্কেই এশিয়ান রিভিওয়ের এক প্রতিবেদনে।
গত একবছরে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ ৬৮ শতাংশ বেড়ে বিনিয়োগের মোট পরিমাণের নতুন রেকর্ড করেছে বলে নিক্কেই এশিয়ান রিভিওয়ের এক প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় অত্যন্ত কৌশলগত স্থানে বাংলাদেশের অবস্থান, ১৬ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, অপেক্ষাকৃত সস্তা শ্রমবাজার, মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বয়স ২৫ বছরের কম, সহজ বিনিয়োগ নীতিমালাসহ বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম লক্ষ্যস্থল হিসেবে উল্লেখ করেছে নিক্কেই এশিয়া।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে দেখছে।
ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি) জানায়, গেল একবছরে বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ৬৮ শতাংশ বেড়ে ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এফডিআই’র ক্ষেত্রে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান বলেও জানায়।
জাপান টোব্যাকো ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ, বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি অংশ হিসেবে চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ স্টেক কেনা, চীনের আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং এর কোম্পানি আলিপে মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি বিকাশের ২০ শতাংশ স্টেক কেনার ফলে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বাংলাদেশ শাখার প্রতিনিধি গুডমুন্ডসন নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে বলেন, এটা ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ বাড়াতে চলমান সংস্কারের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে। ২০১৯ সালের জুন মাসের শেষ নাগাদ চলতি অর্থবছরের এফডিআই গত বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে মেট্রোরেল, সেতু, টানেল নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য প্রকল্প নির্মাণ করছে। এতে শত শত কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। যার অধিকাংশই এসেছে চীন ও জাপান থেকে।
সারাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিকে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কৌশলের কথা উল্লেখ করা হয় নিক্কেই এশিয়ানের প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জাপানের সুমিতোতো, সোজিৎজ, নিপ্পন স্টিল, শিনওয়া ও মারুহিসার মতো কোম্পানিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
সোজিৎজ বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে একটি বেসরকারি বন্দর ও শিল্প পার্ক নির্মাণে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। এছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ১৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সুযোগ-সুবিধার দেশ বাংলাদেশ। চাইলে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।