আমদানি-রপ্তানীদেশজুড়েশিল্প-বানিজ্য
বাংলাদেশে চাল আমদানি নিষিদ্ধ করল সরকার
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ধানের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকারি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে চাল আমদানি নিষিদ্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। চলতি বছর প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদিত হওয়ায় মৌসুমের প্রথম থেকেই চাল আমদানি বন্ধের দাবি ছিল অনেকের। এরই মধ্যে চাল আমদানি নিরুৎসাহ করতে আমদানি শুল্কও বাড়ানো হয়েছে। এখন পুরোপুরি আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
সম্প্রতি ‘পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গৃহীত প্রস্তাব বাস্তবায়ন’ শীর্ষক একটি নির্দেশনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা থেকে বাণিজ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান সময়ে কৃষকের ধানের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে চালের পরিবর্তে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি এবং বিদেশ থেকে চাল আমদানি বন্ধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সানুগ্রহ নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে।’
মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখার উপসচিব শাফায়াত মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে বোরো ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে বিধায় সাধারণ বাজারে ধানের মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার দাবি উঠেছে।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষকদের বিষয়টি মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে অবগত হয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে চাল আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিতে সম্মতি দিয়েছেন। এর পরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়েও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানাতে বলা হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ধানের দাম ঠিক রাখা সরকারের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জের এক কাজ। যারা চাল কিনে খায় তারা কম দামে চাল চায়। অন্যদিকে কৃষকরা বেশি দামে ধান বিক্রি করতে চায়। সরকারকে এই উভয় চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। উল্লেখ্য, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশ বরাবরই খাদ্য ঘাটতির দেশ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত কয়েক বছরে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে এই অবস্থানটিকে এখনই টেকসই পরিস্থিতি বলার মতো সময় আসেনি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সামনে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্য আমদানির প্রয়োজন পড়তে পারে। সাময়িকভাবে কৃষকদের স্বস্তি দিতেই আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।