দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম কেন ইসলাম হলো- প্রশ্ন আ.লীগ নেতার
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ‘পৃথিবীর কোনো দেশে রাষ্ট্রধর্ম নেই’ দাবি করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম কেন ইসলাম হলো- প্রশ্ন তুলেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
তার মতে, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ইসলামকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করে সবচেয়ে খারাপ কাজ করেছেন। কারণ যেখানে ধর্ম সেখানে শেষ।’
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বিশ্ব নদী দিবস-২০২০ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মফিজুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীতে ধর্মের চেয়ে মানুষ বড়। অথচ পৃথিবীতে ধর্মের বাজার হয়ে গেছে। মুঘল সাম্রাজ্যের পতন হয়েছে ধর্মের কারণে। পাকিস্তানের পতন হয়েছে ধর্মের কারণে। যেখানে ধর্ম সেখানে শেষ।’
ভারতের শাসনব্যবস্থায় ধর্মের অবস্থান নিয়ে আফসোস করে এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমার কষ্ট হচ্ছে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র ভারতের জন্য। যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেখানেও ধর্মের রমরমা ব্যবসা শুরু হয়ে গেছে। তারা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে দেশকে। এগুলো দেখলে আমার খুব কষ্ট হয়।’
হেফাজত প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে মফিজুর রহমান বলেন, ‘ধর্মের কারণে আমরা কি আবারও রক্তাক্ত পরিবেশে ফিরে যাব? পাকিস্তানে দেখেন- সেখানে প্রায় ২০০ মাদরাসা বন্ধ। আমাদের দেশে হেফাজত, তাদের নেতার নেতৃত্বে শাপলা চত্বরে তাণ্ডব চলেছে। অথচ সেই নেতাকে তারাই মেরে ফেলেছে। তাদের অপমানে তিনি মারা গেছেন। আর কত হবে ধর্মের ব্যবসা?’
তিনি বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে নদীদূষণকে প্রতিরোধ করা একান্ত আবশ্যক।’ চট্টগ্রাম বন্দরের ২৫ একর জমি ভুমিদস্যুদের ইজারা দেয়া হয়েছে বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অবহিত করবেন বলেও জানান।
প্রধান অতিথি ড. আনিসুজ্জামান খান সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কর্ণফুলী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীর উজান ভাটি এলাকায় বসবাসকারীদের দূষণ নিয়ে বেশি বেশি সচেতনতার আহ্বান জানান। যাতে নদীর জীববৈচিত্র্য ও মানব জীবনকে রক্ষা করা যায়।
তিনি বলেন, ‘নদী বাঁচাতে তীরবর্তী মানুষের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কারণ তারা যদি দূষণে লিপ্ত থাকে তাহলে ভাটি অঞ্চলে মানুষের ক্ষতিটা বেশি হবে। একইভাবে ভাটির মানুষেরও নদীদূষণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি আমরা এ তিনটি পর্যায়ে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেই, তাহলে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে পারব। যদি প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা পায় তাহলে দেশের প্রবৃদ্ধিও বাড়বে।’
কর্ণফুলী গবেষক ড. ইদ্রিছ আলী জানান, চট্টগ্রামের ১৭ শিল্প জোনের ৩০০টি শিল্প কারখানার বর্জ্য প্রতিনিয়ত কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে পড়ছে। এর দূষণ প্রতিক্রিয়া মানবজাতি ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
তিনি বলেন, ‘নদী মানবজীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নদী জীবনের বাহক, সামাজিকতার পরিবাহক, সংস্কৃতির স্রোতধারা। সভ্যতার শুদ্ধি-শুচিকারক, পরিবৃদ্ধি, পরিচালন, পরিবহন, পরিসমাপ্তিতে নদী অন্যতম অনুষঙ্গ, অনুঘটক। দুঃখ-সুখের দোলায় দোলা জীবনের অবারিত স্রোতের মতো মহাকালের মহাসমুদ্রে জলের জলাঞ্জলি দেয়াই নদীর নিরবচ্ছিন্ন সাধনা।’
সাংবাদিক মাইনুদ্দিন দুলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া, রাউজান পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিত, গ্রিন প্লানেটের আহ্বায়ক স্থপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
/এন এইচ