দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম মারা গেছেন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ একুশে পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে রাজধানীর বনানীর নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজলা হাজরা এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সাইদা খানমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
প্রতিমন্ত্রী এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
শোকবার্তায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জানান, ৫০ এর দশকে বেগম পত্রিকায় আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন সাইদা খানম। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের মতো বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালকের সাথেও। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে ঢাকার আজিমপুর এলাকায় অস্ত্র হাতে প্রশিক্ষণরত নারীদের ছবি তোলেন। অদম্য সাহসী আলোকচিত্রী সাইদা খানমের অনুপ্রেরণায় পরবর্তীতে এ সাহসিকতা ও মর্যাদাপূর্ণ পেশায় অনেক নারীর পদচারণা ঘটেছে। বাংলাদেশে নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ এ মহীয়সী নারী তার কর্মের মধ্য দিয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
উল্লেখ্য, ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত ছিলেন সাইদা খানম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও লাইব্রেরি সায়েন্সে মাস্টার্স করেন। বাবা আবদুস সামাদ খান ও মানাছিমা খাতুন।
১৯৩৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। বেগম পত্রিকার মাধ্যমে সাইদা খানম আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তার ছবি ছাপা হয় অবজারভার, ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায়। আলোকচিত্রী হিসেবে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেন তিনি।
ভারত, জাপান, ফ্রান্স, সুইডেন, পাকিস্তান, সাইপ্রাস ও যুক্তরাষ্ট্রে তার তোলা ছবির বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হয়। জাপানে ইউনেসকো অ্যাওয়ার্ড, অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার, বেগম পত্রিকার ৫০ বছর পূর্তি পুরস্কার, বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সম্মানসূচক ফেলোসহ বিভিন্ন স্বীকৃতি পান তিনি।
লেখালেখিও করতেন সাইদা খানম। ‘ধূলোমাটি’, ‘স্মৃতির পথ বেয়ে’ ও ‘আমার চোখে সত্যজিৎ রায়’ তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
/এন এইচ