করোনাপ্রধান শিরোনামস্বাস্থ্য
বসুন্ধরার হাসপাতাল নির্মাণ ৯৫ ভাগ সম্পন্ন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মাণাধীন দেশের বৃহত্তম করোনা আইসোলেশন সেন্টারটির নির্মাণকাজ প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আজকের মধ্যেই হাসপাতালটি হস্তান্তর করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কথা।
এরপর স্বাস্থ্য অধিদফতর হাসপাতালটি বুঝে নিয়ে জনবল নিয়োগ ও উদ্বোধনের ব্যবস্থা করলেই রোগী ভর্তি করা যাবে। উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম গতকাল বলেন, দ্রুত হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ করতে আমরা ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও রাত-দিন কাজ করেছি। কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় বাইরের কাজগুলো পিছিয়ে গেছে। তারপরও আমরা কাজ প্রায় শেষ করে এনেছি। আমাদের সবগুলো বেড চলে এসেছে। পুরো ট্রেড সেন্টারে ফ্লোরম্যাট বসানো হয়ে গেছে। বেডও অধিকাংশ বসে গেছে। বাকি বেডগুলো বসাতে বেশি সময় লাগবে না। এই মাসের মধ্যে হাসপাতাল চালুর যে লক্ষ্য ছিল, আমরা এখনো সেখানেই আছি।
গতকাল আইসিসিবিতে নির্মাণাধীন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেড সেন্টারের তিনটি ব্লকেই বসানো হয়ে গেছে ম্যাট। অধিকাংশ জায়গায় বেড ও আসবাব সাজানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে হেল্প ডেস্ক, ভর্তি ডেস্ক ও নার্সদের বসার ডেস্ক। চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের কক্ষগুলো সাজানো শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়া তাঁবুর বাইরে বেডগুলোর বিভিন্ন অংশ যুক্ত করা হচ্ছে, যুক্ত হলেই বেডগুলো নিয়ে ট্রেড সেন্টারের তাঁবুর নিচে বসানো হচ্ছে।
আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন গতকাল বলেন, ১২০০-এর বেশি বেড বসানো হয়ে গেছে। বাকি বেড চলে এসেছে। এখন শুধু অ্যাসেম্বল করে বসানো হচ্ছে। বলা যায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ। আজ-কালের মধ্যে হাসপাতাল প্রস্তুত হয়ে যাবে। এখন স্বাস্থ্য অধিদফতর বুঝে নিয়ে লোকবল নিয়োগ করে উদ্বোধনের ব্যবস্থা করলেই চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করা যায়। এটা বুঝে নেওয়ার জন্য দু-একদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আমাদেরকে তারিখ জানানোর কথা। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালটি উদ্বোধন করবেন। একই ফ্লোরে প্রায় ১৫০০ শয্যা থাকায় কম চিকিৎসক-নার্স দিয়ে অনেক রোগীর দেখভাল করা সম্ভব হবে। আমরা বসুন্ধরা থেকে চাচ্ছি দ্রুত এটা হস্তান্তর হোক। দ্রুত চিকিৎসাসেবা চালু হোক। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরও রাত-দিন এক করে কাজ করে এটা দাঁড় করিয়েছে। এখন স্বাস্থ্য অধিদফতরকে হাসপাতালটি বুঝে নিয়ে চালু করতে হবে। বুঝে নেওয়ার কাজটা একদিনেই সম্ভব।
তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে ২ হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে ১ হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
/আরএম