প্রধান শিরোনামশিক্ষা-সাহিত্য
বশেমুরবিপ্রবি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আহত ২০
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
এ হামলায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শনিবার (২১ সেপ্টম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানকালে বহিরাগতদের হামলায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সূত্র জানায়, আজ সকালে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিদের্শনায় বলা হয়, আজ রাত ৮টার মধ্যে সব ছাত্রী ও রোববার সকাল ১০টার মধ্যে সব ছাত্রদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ নির্দেশ উপেক্ষা করে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসের বাইরে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তাদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতের কয়েকজনকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার প্রসঙ্গে কয়েক শিক্ষার্থী জানান, সকালে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার কথা শোনা গেলেও এ বিষয়ে আদেশের কোনো চিঠি পাইনি আমরা। দুর্নীতিসহ নানা সময় শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের ঘটনার প্রতিবাদে ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন করছি আমরা। আর এ সময়েই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা এলো।
তারা জানায়, সকালে অটোরিকশাযোগে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশ নিতে আসার পথে গোপালগঞ্জের সোনাকুড় নামক স্থানে একদল বহিরাগত তাদের বাধা দেয়। এর পর শিক্ষার্থীরা একযোগে পায়ে হেঁটে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকলে হঠাৎ করে বহিরাগতদের আক্রমণ শিকার হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি জানাতে ফেসবুক লাইভ করায় দুটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকের ওপর হামলা চালান তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আমাদের একমাত্র দাবি- ভিসির পদত্যাগ। ভিসি পদত্যাগ করলেই তারা আন্দোলন থেকে সরে যাবেন। না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
হলত্যাগ করা প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা ন্যায্য দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে অহিংস আন্দোলন করছি। ছুটি বাড়িয়ে এবং হলত্যাগসহ হলের খাবার বন্ধ করে আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে। আমাদের দাবি আদায় করার পথে যত ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ফেসবুকে লেখার জেরে ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিসির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিসি বরাবর জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন।
ভিসি বহিষ্কারাদেশ তুলে নেন। তবে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে জোর আন্দোলন গড়ে তোলেন শিক্ষার্থীরা।
ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারি, বাজেটের অর্থ আত্মসাৎসহ বিশ্বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ আনেন শিক্ষার্থীরা। ভিসির পদত্যাগের একদফা, এক দাবি নিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর রাত থেকে আন্দোলনে নামেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
/আরএম