দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বেশকিছু করোনা হাসপাতাল!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ রোগী না থাকায় রাজধানীতে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসায় ‘ডেডিকেটেড’ হিসেবে ঘোষিত বেশকিছু হাসপাতালের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এ ধরনের ঘোষণা আসতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আপাতত রাজধানীর কয়েকটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। তবে করোনা পরিস্থিতি ও রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগুলোতে করোনা হাসপাতালের কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা আসতে পারে।
রাজধানীসহ সারাদেশের করোনাভাইরাস আক্রান্তদের জন্য ঘোষিত ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ ১৪ হাজার ৬৬৪টি এবং আইসিইউ ৩৭৪টিসহ মোট শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৮টি। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) পর্যন্ত এসব হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় ৪ হাজার ১১০ জন এবং আইসিইউতে ২০৩ জনসহ মোট ভর্তি রোগী ছিল ৪ হাজার ৩১৩ জন। সাধারণ শয্যা ১০ হাজার ৫৫৪ এবং আইসিইউতে ১৭১টি শয্যা খালি ছিল।
করোনা ডেডিকেটেড হিসেবে ঘোষিত হাসপাতালগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকায়। রাজধানীতে সাধারণ শয্যা ৬ হাজার ৩০৫টি ও আইসিইউ শয্যা ১৪২টিসহ মোট শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৪৪৭টি। গতকাল পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিল সাধারণ শয্যায় ১ হাজার ৯৮৬ জন এবং আইসিইউতে ১০৫ জন। মোট রোগী ভর্তি ২ হাজার ৯১ জন। ফলে শয্যা খালি ছিল সাধারণ শয্যায় ৪ হাজার ৩১৯ এবং আইসিইউতে ৩৭ জনসহ মোট ৪ হাজার ৩৫৬টি।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ শয্যায় মোট ভর্তি ১ হাজার ৯৮৬ জনের মধ্যে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২০০ শয্যার মধ্যে ১১৮ জন, ৫০০ শয্যার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ২৭৫ শয্যার মধ্যে ২২৯ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এবং বার্ণ ইউনিটে ৮৮৩টির মধ্যে ৫৭৭ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০৬ শয্যার মধ্যে ১১০ জন, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের ১০১২ জনের মধ্যে ৩৯৬ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৩৭০টি শয্যার মধ্যে ১২৫ জন, ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে ১০৫টির শয্যার মধ্যে ২২ জন, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ১০টি শয্যার মধ্যে ১ জন, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতালে ১২১টি শয্যার মধ্যে ৩৬ জন, কমলাপুরের রেলওয়ে হাসপাতালে ৩০টি শয্যার মধ্যে একজনও ভর্তি নেই, মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১৪০ শয্যার মধ্যে ২৩ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪২০ শয্যার মধ্যে ১২২ জন, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ধানমন্ডিতে ২০০ শয্যার মধ্যে ৭০ জন, বসুন্ধরা কোভিড হাসপাতালে ২ হাজার ১৩ শয্যার মধ্যে ২৯ জন, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ৪৬টি শয্যার মধ্যে ৫ জন এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৭৪ শয্যার মধ্যে ১২৩ জন রোগী ভর্তি ছিল।
একইভাবে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ শয্যায় মোট ভর্তি ১০৫ জনের মধ্যে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ১৬ শয্যার মধ্যে ১৬ জন, ৫০০ শয্যার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১০ শয্যার মধ্যে ১০ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ ও বার্ণ ইউনিটে ২৪টি শয্যার মধ্যে ১৭ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ শয্যার মধ্যে ৯ জন, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের ১৫ শয্যার মধ্যে ৯ জন, বিএসএমএমইউতে ১৫টি শয্যার মধ্যে ১১ জন, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতালে ৫টি শয্যার মধ্যে ৩ জন, মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১৩ শয্যার মধ্যে ১০ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ শয্যার মধ্যে ৯ জন, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ শয্যার মধ্যে ৯ জন, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ৬টি শয্যার মধ্যে ২ জন ভর্তি ছিলেন। আর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮টি শয্যার মধ্যে কোনো রোগী ভর্তি ছিল না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ পর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বেশ কিছু দিনের করোনা রোগী ভর্তির তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড ঘোষিত বেশ কয়েকটি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা খুবই কম। রোগী কম থাকলেও সেখানে চিকিৎসক ও নার্সসহ অন্যান্য স্টাফ নিয়োগের ফলে জনবল সংকটে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েকটি হাসপাতালের কার্যক্রম আপাতত সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। রোগীর চাপ বাড়লে আবার সেগুলো খুলে দেয়া হবে।
/এন এইচ