বিনোদনসাক্ষাৎকার

‘বড়লোকের বিটি লো’ নিয়ে আক্ষেপের সুর রতন কাহারের

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই র‍্যাপার বাদশার সঙ্গে পায়েল দেব এর গাওয়া ‘বড়োলোকের বিটি লো’ গানটি শুনে কান ঝালাপালা হওয়ার জোগাড়। গানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গেন্দা ফুল’। বাংলা গানের সঙ্গে পাঞ্জাবি ঢুকিয়ে নতুন করে গানটি কম্পোজ করা হয়েছে। গানের মিউজিক ভিডিয়োতে কোমর দোলাতে দেখা গিয়েছে বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে। আর বাদশা ও পায়েল দেবের গাওয়া এই গান নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড়।

সমস্যা র‍্যাপার বাদশা ও পায়েল দেবের গান গাওয়া নিয়ে নয়, গানের মূল উৎসের কথা স্বীকার না করা নিয়ে। ইউটিউবে একটি ভালো করে খেয়াল করলেই দেখা যাবে গানের বিবরণীতে গানের কথায় (Lyrics) বাদশার নাম লেখা। কোথাও বহু পুরনো এবং জনপ্রিয় বাংলা গানের উৎসের কথা স্বীকার করা হয়নি। আর তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অনেকেই। অভিযোগ, এমন কালজয়ী গানের যিনি স্রষ্টা, সেই শিল্পী অনেকের অবহেলার মধ্যে বিস্মৃতই রয়ে গেলেন। আর তাঁর গান নিয়ে যা খুশি তাই করে ব্যবসা করে চলেছে অনেকে। অথচ সেই রতন কাহার তাঁর প্রকৃত সম্মান পেলেন না।

‘বড়লোকের বিটি লো’ প্রকৃত পক্ষে যাঁর লেখা বলে দাবি উঠেছে সেই কবি, তথা গানের লেখক ও সুরকার রতন কাহারের এবিষয়ে মতামত কী? বিষয়টি জানতে রতন কাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কী বললেন রাঢ় বাংলার শিল্পী রতন কাহার?

‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি কী প্রকৃতই আপনার লেখা?

রতন কাহার- হ্যাঁ, এই গানটি আমার লেখা, সুরও আমার। এবার যদি মানুষ এভাবে বেইমানি করে আমি কী করবো বলুনতো? আমি অত্যন্ত গরিব মানুষ। অনেকেই আমাকে ব্যবহার করেছে। অথচ আমার নাম দেয়নি। অনেকেই আমার কাছ থেকে গান নিয়ে গিয়েছে, নিজের নামে চালিয়েছে। তাঁদের লেখার ক্ষমতা নেই। আমার গান নিজের নামে চালিয়েছে। আমি অসহায়। আমি মাটির ঘরে থাকা, মাটির গান লেখা মানুষ। কিছু বুদ্ধিজীবি মানুষ তাঁরা অনেক কথাই বলে, আশ্বাস দেয়। কিন্তু আমাদের মতো শিল্পীকে মূল্য দেয় না। আমার এটা নিয়ে প্রতিবাদ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই।

আপনি কবে প্রথম এই গানটি লিখেছিলেন ও গেয়েছিলেন?

রতন কাহার- একদম ঠিকঠাক মনে নেই। যতদূর মনে পড়ে ১৯৭২ সালে লিখেছিলাম। গানটা আমি প্রসারভারতীতে প্রথম গেয়েছিলাম। পরে আমি গানটি ‘আনন’ গোষ্ঠীর রাজকুমার সাহাকে দিয়েছিলাম। ওনারা কোরাস গাইতেন। সেখান থেকেই গানটা ছড়িয়ে পড়ে। স্বপ্না চক্রবর্তী গানটি লিখে নিয়ে গিয়েছিল আমার খাতা থেকে। পরে ১৯৭৬ সালে স্বপ্না চক্রবর্তী গানটা রেকর্ড করেন। কিন্তু সেখানেও গানটি আমার (রতন কাহার) লেখা ও সুর বলে কোনওভাবে স্বীকার করা হয়নি। তবে গানটি রেকর্ড হওয়ার বহু আগেই আমি আকাশবাণীতে গানটি গেয়েছিলাম। তখন ওই অনুষ্ঠানের পরিচালক যতদূর মনে পড়ছে মলয় পাহাড়ি, আর্য চৌধুরীও ছিলেন। পাহাড়ি সান্যালই আকাশবাণীতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেসময় স্বপ্না চক্রবর্তীও আকাশবাণীতে অনুষ্ঠান করতেন।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close