দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
ফের পুরানো চেহারায় রাজধানী ঢাকা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ অফিস-আদালত সবকিছু আগের মতো হওয়ায় ঢাকায় মানুষ ও যানজটের চাপ বেড়েছে। দিনের অধিকাংশ সময় বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট লেগে থাকছে। বেড়েছে মানুষের ভোগান্তি।
ফলে পুরানো চেহারায় ফিরেছে রাজধানী ঢাকা। মানুষের ভিড় ও যানজট বাড়ায় সেই চিরচেনা ঢাকা তার স্বরূপ ফিরে পাচ্ছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ না কমলেও ক্রমেই মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় মানুষের ভিড়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছেন না কেউ।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার। তখন এক ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয় ঢাকা। সড়কের কোথাও মানুষের আনাগোনা দেখা যেতো না।
দুই মাস পর গত ১ জুন থেকে অফিস আদালত সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়ার পাশাপাশি ভাড়া বাড়িয়ে গণপরিবহণ চালু করা হয়। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহণে ৫০ শতাংশ আসনে যাত্রী নেওয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়ে আগের মতো যাত্রী নেওয়ার অনুমতি দেয় সরকার। ফলে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে।
ঈদুল আজহার পর ৬ আগস্ট আগের মতো সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অফিস সময় নির্ধারণ করে সরকার। এরপর অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও কর্মীদের বাসা থেকে কাজের পরিবর্তে অফিস করার নির্দেশনা দেয়। আর তখন থেকেই রাজধানী স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরা, বনানী, গুলশান, গুলিস্তান, কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী ও পুরান ঢাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে লেগে আছে যানজট। থেমে থেমে চলছে গাড়ি। সিগনালে আগের মতো অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রতিটি গাড়িকে।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের ব্যাপক ভিড়। সবজি ও মাছ বাজারে রীতিমতো পা ফেলাই দায়।
রাজধানীর বাইরে থেকেও মানুষ ফিরছে এই নগরে। যাত্রাবাড়ী, মহাখালী ও গাবতলী ঘুরে দেখা যায়, দূরপালস্নার বাসগুলো আসন ভর্তি করে যাত্রী নিয়ে আসছে রাজধানীতে। অনেকে দীর্ঘ চার-পাঁচ মাস পর ফিরছেন কর্মস্থলে।
কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা নিকেতনের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, কারওয়ান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এসেছি। মানুষের ভিড়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা দায়।
গণপরিবহণের যাত্রী দিলরুবা সুলতানা নেহা বলেন, আজিমপুর থেকে নিয়মিত অফিস করতে নতুন বাজার আসছি। কিছুদিন আগেও সময় লাগতো ৪০ মিনিট, এখন সেখানে লাগে দেড় ঘণ্টা।
রাজধানীর মহলস্নায় দোকানপাট বা কাঁচাবাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটগুলো এখন পুরোপুরি খুলেছে। রাত ১০টার মধ্যে এখন রাজধানীর কোনো মহলস্নায়ই এখন আর অন্ধকার নেমে আসে না। জন্মদিন বা বিয়েসাদির আয়োজন এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। তবে বন্ধ কমিউনিটি সেন্টারভিত্তিক ব্যবসাগুলো শুরু করার প্রস্তুতি চলছে।
করোনা আগমনের পর থেকে স্থবির হতে থাকা জীবনযাত্রা কিছুটা ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর চেষ্টা করলেও এখন সরাসরি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সবাই। মানুষের জীবন ও অর্থনীতিকে অনেক পেছনে ফেলে দিয়েছে এই করোনা। তাই সামনে এগুতে হবে। পূরণ করতে হবে করোনার কারণে সৃষ্ট ঘাটতি। তাই এই ছুটে চলা।
এ বিষয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার একাধিক জনের সঙ্গে কথা বললে সবাই এক সুরে বলেন, করোনা সবকিছু উল্টোপাল্টা করে দিয়েছে। দীর্ঘদিন বেকার কিংবা বসে থাকার ফলে সব সঞ্চয় ভেঙে খেয়ে ফেলেছি। এখন রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। জীবিকাকে টিকিয়ে রাখতে জীবন বাজি রাখা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
/এন এইচ