স্বাস্থ্য
প্যানিক অ্যাটাক কি? প্যানিক অ্যাটাকে করণীয়!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: মানসিক রোগগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ বা ব্যাধি হলো ফোবিক অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার। স্পেসিফিক ফোবিয়াকে এর আরেকটা রূপ বলা যায়। এ রোগের ক্ষেত্রে রোগীর অহেতুক প্রচণ্ড ভীতি তৈরি হয়। খুব বেশি ভীতির মধ্যে যখন রোগী বসবাস করে তখন মাঝে মাঝে তার মধ্যে প্যানিক অ্যাটাকের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা শাস্ত্রে প্যানিক অ্যাটাক বলতে প্রচণ্ড ভয়ে শরীরের কিছু অস্বাভাবিকতাকে বুঝানো হচ্ছে। এই অবস্থাকে সামাল দিতে অবশ্যই প্যানিক অ্যাটাকের উপসর্গ সম্পর্কে অবগত থাকাটা প্রয়োজন।
অ্যানজাইটি অ্যান্ড ডিপ্রেশন অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার মতে, প্যানিক অ্যাটাকের উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হলো- বুক ধড়ফড় বা দ্রুত হৃদস্পন্দন, ঘেমে যাওয়া, শরীর কাঁপা, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসরোধ হচ্ছে মনে হওয়া, বমিভাব, পেট কামড়ানো বা টাইট হওয়া, মাথা ঘোরানো বা চেতনা হারাচ্ছে মনে হওয়া, অসাড়তা বা শরীর ঝিনঝিন করা, ঠান্ডা বা গরম লাগা, আশপাশের সবকিছুকে অবাস্তব মনে হওয়া, মানসিক অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা ও মৃত্যু হতে যাচ্ছে এমন মনে হওয়াকে ধরে নিতে পারেন যে প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর চেয়ে কম উপসর্গ নিয়েও প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।
চিকিৎসকেরা জানান, প্যানিক অ্যাটাককে ভয়াবহ মনে হলেও শরীরের ক্ষতি হয় না। তবে প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হলে খুব দ্রুত তা থামানোর চেষ্টা করতে হবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, প্যানিক অ্যাটাকের ক্ষেত্রে শরীরের সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম অত্যধিক সক্রিয় হয়ে যায়। সাধারণত প্যানিক অ্যাটাকের স্থায়িত্ব হয় ১০ মিনিট। এরপর শারীরিক প্রতিক্রিয়া কমতে থাকে।
হঠাৎ প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হলে তা থামানোর জন্য আপনার কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এগুলো হলো-
১) প্রথমেই নিজেকে শান্ত করতে জোরে জোরে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারেন। এতে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়।
২) যে মুহূর্তে এ ধরনের ভয় ধাওয়া করবে তখনই নিজের যে কাজটা সবচেয়ে ভালো লাগে সেটাই করা উচিত। হতে পারে সেটা গান গাওয়া বা স্রেফ টিভি দেখা ইত্যাদি।
৩) দিনে কিছু সময় নিয়মিত মেডিটেশন করুন। এতে উপকার পাবেন। সেই সঙ্গে মানসিক প্রশান্তির জন্য নিয়মিত যোগাসন করার অভ্যাস করতে পারেন।
৪) দুঃখজনক হলেও সত্যি দিনের মধ্যে বেশিরভাগ সময় আমরা অকার্যকরী চিন্তা করে কাটাই। যা আমাদের জীবনকে অতিষ্ট করে তোলে। তাই যতোটা সম্ভব দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
৫) শরীর ও মনকে ভালো রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করার অভ্যাস করতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিটের শরীরচর্চা মানসিক স্ট্রেস অনেকটাই কমিয়ে আনে।
৬) যার সঙ্গে কথা বলে আরাম পান তার সঙ্গেই কথা বলুন। চারপাশে এমন কিছু মানুষ থাকেই যাদের কথা বলার কোনও মাপকাঠি থাকে না। ভালো না লাগলে তাদের এড়িয়ে চলুন।
৭) প্যানিক অ্যাটাক ঠেকাতে একটি চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। পায়ের পাতা মাটিতে চেপে রাখুন। এভাবে পাঁচ মিনিট বসে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিন। এ ছাড়া নিজেকে ভালো করে হাইড্রেটেড রেখেও অনেক সময় এই অবস্থার মোকাবিলা করা যায়। /সূত্র: নিউজ ১৮
/এএস