গার্মেন্টসপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য

পোশাক রপ্তানি; যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আবারও শঙ্কা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে করোনার সংক্রমণ ছিল অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। সে কারণে ২০২০ সালে দেশটিতে তৈরি পোশাক আমদানি এক-চতুর্থাংশ কমে যায়। তবে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে আবারও দেশটিতে পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। সেই সুফল বাংলাদেশও পেয়েছে। তবে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ায় দেশটিতে পোশাক রপ্তানি নিয়ে আবারও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত বছর একপর্যায়ে চীনকে ছাড়িয়ে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক হলেও পরিস্থিতি আবার বদলেছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে চীন ২৪৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ২২ শতাংশ কম।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান গত বছর ৬ হাজার ৪০৭ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করে। ২০১৯ সালের চেয়ে এই আমদানি ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম। তবে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে ১ হাজার ৯১ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে দেশটির ব্যবসায়ীরা, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান দিয়েছে।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ১০০ কোটি ডলার বা সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি করেছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ কম। এই বাজারে চীন ও ভিয়েতনামের পর বাংলাদেশ তৃতীয় সর্বোচ্চ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।

গত বছর একপর্যায়ে চীনকে ছাড়িয়ে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক হলেও পরিস্থিতি আবার বদলেছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে চীন ২৪৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ২২ শতাংশ কম। অন্যদিকে ভিয়েতনাম গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ২০৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। গত বছরের প্রথম দুই মাসে দেশটি ২৩৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল। সেই হিসাবে চলতি বছর তাদের রপ্তানি কমেছে ১২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।

শীর্ষ তিন রপ্তানিকারক দেশের মতোই ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার পোশাক রপ্তানিও কমেছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ভারত ৫৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করলেও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ সর্বোচ্চ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি করেছে ৫৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তাদের রপ্তানি কমে গেছে ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে ব্যবসায় ঘুরে দাঁড়াতে আরও বেশি সময় লাগবে। কারণ, ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো ছয়–সাত মাস পরের অবস্থা কী হবে, সেই পূর্বাভাস দেখে সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল বুধবারও ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৯ শতাধিক মানুষ। বাংলাদেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে বাজারটিতে নতুন করে ক্রয়াদেশ কমার শঙ্কা রয়েছে। যদিও করোনার টিকা দেওয়ার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বেশ এগিয়ে রয়েছে। আগামী মে মাসের মধ্যে ২০ কোটি জনগণকে টিকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এখনো শ্লথ। দেশটির ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান সব ধরনের পোশাক নিলেও পরিমাণে কম। বিপুলসংখ্যক মানুষ টিকা নিলেও দেশটিতে নতুন করে আবার সংক্রমণ বাড়ছে। আসলে করোনার নিত্যনতুন ধরনের কারণে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।’

ফজলুল হক আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে ব্যবসায় ঘুরে দাঁড়াতে আরও বেশি সময় লাগবে। কারণ, ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো ছয়–সাত মাস পরের অবস্থা কী হবে, সেই পূর্বাভাস দেখে সিদ্ধান্ত নেয়। তাই দ্রুত করোনা পরিস্থিতি উন্নতি না হলে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যদিও ক্রেতারা সে ধরনের কোনো বার্তা এখনো দেয়নি। (সূত্র: প্রথমআলো)

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close