গার্মেন্টসশিল্প-বানিজ্য

পোশাক খাতে চাকরি পাবে ১৫ লাখ শ্রমিক

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ প্রশিক্ষণ দিয়ে পোশাক খাতে ১৫ লাখ দক্ষ শ্রমিকের চাকরি দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি কীভাবে পরিচালনা করা হবে তা নির্ধারণে আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। এর নাম দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা কমিটি। কমিটির প্রধান কাজ হচ্ছে পোশাক খাতে দক্ষ শ্রমিকদের চাকরির ব্যবস্থা করা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, পোশাকের ফ্যাশন, ডিজাইন, বৈচিত্র্য এবং গুণগত মানের বিষয়টি অনেকাংশে দক্ষ শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে থাকে। এ কারণেই পোশাক খাতকে প্রশিক্ষণ প্রদান নীতিমালা-২০১৯ আলোকে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক ও সিএমসি প্রধানকে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য প্রতিনিধিরা হলেন প্রতিনিধি বস্ত্র সেল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রতিনিধি শ্রম অধিদফতর, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, প্রতিনিধি বস্ত্র অধিদফতর, প্রতিনিধি বেপজা, প্রতিনিধি বিজিএমইএ, প্রতিনিধি বিকেএমইএ, উপপরিচালক সিএমসি রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো।

জানা যায়, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সংক্রান্ত সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা, প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বাছাই সংক্রান্ত কাজ করবে। প্রশিক্ষণার্থী শ্রমিক কর্মচারী নির্বাচনপূর্বক নিবন্ধন প্রক্রিয়া নির্ধারণ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। নিবন্ধিত শ্রমিকরা কে কোন সময় কোন প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করবে তা সুনির্দিষ্ট উল্লেখ করে প্রস্তুতকৃত তালিকা সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করতে হবে। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণয়ন করা মডিউল সংশোধন, সংযোজন এবং অনুমোদন করবে। সরকার প্রদত্ত তহবিল ব্যবহারপূর্বক প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পর্কে উপযুক্ত সময়ে পত্র-পত্রিকায় ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ শিল্পে বর্তমান ৪০ লাখ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এ খাতে আরো কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তবে সেই সুযোগ কেবল দক্ষ শ্রমিকদের জন্য। ২০২১ সালের মধ্যে শুধু পোশাক খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এটা পূরণ করতে হলে অবশ্যই দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ শিল্পে শ্রমিকের চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ লাখ ২৭ হাজার ৪৬৩ জনে। ওই সময় আরো ২১ লাখ শ্রমিককে নতুন করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক পরিণত করতে হবে।

জানা যায়, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে কাজ করছে সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিজ—সিবাই। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে অধিকতর মূল্য সংযোজনের লক্ষ্যে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিবাই উদ্বোধন করেন। তবে ২০১৬ সালের জুলাইতে ঢাকার আশুলিয়ায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে ৫ হাজার ৭৬৩ শ্রমিক বিভিন্ন কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছে। এছাড়া ইউসেপ, মুসলিম এইড এবং বাংলাদেশ কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত ১০টি পোশাক কারখানায় এন্টারপ্রাইজ বেইজড ট্রেনিং বা ইবিটি সেন্টার স্থাপন করেছে সিবাই।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close