প্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
পোশাক খাতের সংকট কাটলে চাঙা হবে দেশের অর্থনীতি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ দেশের তৈরি পোশাক খাত মোট দেশীয় উৎপাদনে ১১ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখছে। এছাড়া প্রায় ৯৮ শতাংশ আরএমজি কারখানা বাণিজ্যিক ব্যাংকের গ্রাহক। আমদানি-রফতানিতেও এ খাতের বড় অংশগ্রহণ রয়েছে। তাই বর্তমানে আরএমজি খাতের যে সংকট রয়েছে তা পুনরুদ্ধার হলে অন্যান্য খাতের উপকার হবে। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি চাঙা হবে।
‘কোভিড-১৯ বর্তমান এবং মহামারি-পরবর্তী পরিস্থিতিতে আরএমজি ইন্ডাস্ট্রির চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক ওয়েব টক সিরিজে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও খাত সংশ্লিষ্টরা। মোবাইল অপারেটর রবির সৌজন্যে ওয়েবিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই)।
বিএমসিসিআই সভাপতি রাকিব মোহাম্মদ ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কর্মসংস্থান, বৈদেশিক রিজার্ভ এবং নারী ক্ষমতায়নের জন্য তৈরি পোশাকশিল্পের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল। শিল্পটি দেশের মোট দেশীয় উৎপাদনে ১১ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখে। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, আট হাজার ৬০০টিরও বেশি আরএমজি কারখানাগুলো দেশের বৃহত্তম শিল্পখাত গঠন করে এবং ৪ দশমিক ১ মিলিয়ন শ্রমিককে জড়িত করে উৎপাদন কর্মসংস্থানে ৩৬ শতাংশ অবদান রাখে।
বিএমসিসিআই সভাপতি বলেন, সুশৃঙ্খল এবং স্বল্প মজুরির নারী শ্রমিকরা এই শিল্পের মেরুদণ্ড। ৬১ শতাংশ নারীর কর্মসংস্থান দিয়ে আরএমজি শিল্প নারী ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গ সাম্যতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, প্রধান গ্লোবাল ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য তাৎক্ষণিক রক্ষণাত্মক ভূমিকা নিয়েছে এবং এটি শ্রমিক কর্মসংস্থান, উপার্জন এবং সামগ্রিক ক্রিয়াকলাপগুলোতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। পোশাক রফতানির ওপর বাংলাদেশের অতি নির্ভরতা তার অ্যাকিলিস হিল (প্রধান দুর্বলতা) হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।
বাংলাদেশের মালয়েশিয়া হাইকমিশনের মন্ত্রীর উপদেষ্টা মোহাম্মদ খলিল ইব্রাহিম বলেন, বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ এক মাসের মধ্যে বিশ্বের ক্রয়ের অভ্যাস বদলেছে। বিশ্বজুড়ে করোনভাইরাসের প্রভাবগুলো অনিয়ন্ত্রিত এবং অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছে। সেই কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারের তাৎপর্যপূর্ণ বৃদ্ধি সব সংস্থার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এটি ব্যবসায়ের পরিচালনার পদ্ধতিতে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করে চলেছে। এই পরিবর্তিত প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে সংস্থাগুলোকে ব্যয় দক্ষতা এবং আত্মরক্ষার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিতে দ্রুত বর্ধমান প্রবণতার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদ বলেন, আরএমজি শিল্পের এই ক্ষতিগ্রস্ত পরিস্থিতির প্রভাব কেবল এই শিল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং অন্যান্য শিল্প, গ্রাহক ও সেবাখাতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, আরএমজি শিল্পের সার্বিক মূল্য সংযোজন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পশ্চাৎ-সংযোগ শিল্পগুলো বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৬৩.২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরএমজি শিল্পটি অন্যান্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্র যেমন ব্যাংকিং, বীমা, রিয়েল এস্টেট, প্যাকেজিং, হোটেল, ভোগ্যপণ্য, ইউটিলিটি পরিষেবা ও এমন প্রতিটি ক্ষেত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। ফয়সাল সামাদ আরও বলেন, বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ৯৮ শতাংশ আরএমজি কারখানা বাণিজ্যিক ব্যাংকের গ্রাহক।
/এন এইচ