দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে
পাচারের শিকার নদী এখন আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সমন্বয়ক
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: একসময় পাচার হওয়া নদীই পরবর্তীতে হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের বাংলাদেশ অঞ্চলের সমন্বয়ক। ভারত, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পর্যন্ত তার জাল বিস্তৃত। বহুভাষায় পারদর্শী এই নারীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ভারতে গ্রেপ্তার টিকটক হৃদয় বাবুসহ মানবপাচার চক্রের সদস্যদের।
২০১৫ সালে পাচারের শিকার হয়ে মালয়েশিয়ায় যান নদী। এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের সঙ্গে হাত মেলান তিনি। এই নারীর জালে আটকা পড়ে ভারত, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পাচার হয়েছে বহু দরিদ্র কিশোরী ও তরুণী। তারপর তাদেরকে যৌনকর্মে বাধ্য করে কাড়ি কাড়ি টাকা কামাচ্ছে পাচারকারীরা।
পাচার হওয়া মেয়েদের দেখভালে প্রায়ই বিদেশে যাতায়াত করেন নদী। মানবপাচারকারী পরিচয় আড়াল করতে নিজেকে নৃত্যশিল্পী হিসেবে গড়ে তোলেন। দেশ-বিদেশে তথাকথিত নৃত্য পরিবেশনও করেন তিনি। ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকেও রয়েছে তার সরব উপস্থিতি। মুন্সিগঞ্জে নদীর এক ডজন নাম পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারতে ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে বাগিয়েছেন আধার কার্ড।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (তেজগাঁও বিভাগ) উপ কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘নদী নামে যে মেয়েটির কথা আমরা জেনেছি সে ভারত, মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে মানব পাচারে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে। সে একাধারে বাংলা, মালয়, হিন্দি এবং আরবী ভাষায় কথা বলতে পারে।’ নদীকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তার কাছ থেকে পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হলে তদন্তে নামে দুই দেশের পুলিশ। এঘটনায় ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছে ১১ বাংলাদেশি ও এক ভারতীয়। এর মধ্যে দশজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ভারতে গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে নদীর বলে জানায় পুলিশ। এছাড়া বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৩ মানবপাচারকারী। এরমধ্যে ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।