দেশজুড়েশিল্প-বানিজ্য

পাইকারিতে পেয়াজের দাম কমলেও তার রেস পড়েনি খুচরা বাজারে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: রাজধানীর পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন পেঁয়াজের দাম বেশ কমেছে। কিন্তু খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দাম এখনো সেভাবে কমেনি। খুচরা বিক্রেতাদের বক্তব্য, নতুন পেঁয়াজ এখনো পাননি তাঁরা, তাই বাড়তি দরে আগে কেনা পেঁয়াজ বিক্রি শেষ না হওয়ায় দাম কমছে ধীরগতিতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে ইতিমধ্যে আমদানি করা পেঁয়াজ চলে এসেছে। খুচরা বাজারগুলোতে আমদানি করা এই পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে এর দাম আরও কমে আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (০৭ জুন)রাজধানীর মালিবাগ, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এসব বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তাঁরা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন কেজিপ্রতি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। কেউ কেউ ৮৫ টাকা পর্যন্ত দামও রাখছেন। সেই হিসাবে গত তিন দিনে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

সরকার পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেওয়ার আগে এই পণ্যের দাম কেজিপ্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তবে আমদানির ঘোষণা আসার পর সেই দাম আর বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে থাকেনি। দাম বেশ দ্রুত নেমে আসতে শুরু করে। তবে দাম বেশি কমেছে পাইকারি বাজারে।

রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আবদুল মাজেদ প্রথম আলোকে বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজ আসার ফলে বাজারে পেঁয়াজের দামে বড় পতন হয়েছে। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের মূল্য কেজিপ্রতি ৫০ টাকার কিছু বেশি কমেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে মগবাজার ও মালিবাগ বাজারে আজকেও আমদানি করা পেঁয়াজ দেখা যায়নি। তবে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা দু-এক দিনের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ শেষ করে আমদানি করা পেঁয়াজও নিয়ে আসবেন।

মালিবাগ বাজারের রহিম স্টোরের বিক্রেতা আবদুল জলিল প্রথম আলোকে বলেন, দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে আমদানি করা পেঁয়াজ এলে দাম আরও কমবে। আগে আনা দেশি পেঁয়াজ এখন কেনা দামেই ছেড়ে দিতে হচ্ছে।

প্রায় একই কথা বলেছেন, মগবাজারে নিউ রিনিওয়াল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্রেতারা এসে বলছেন তাঁরা টিভিতে-পত্রিকায় দেখেছেন পেঁয়াজের দাম কমেছে। কিন্তু আমি আগে কেনা বাড়তি দামের দেশি পেঁয়াজ এখনো শেষ করতে পারিনি। নতুন করে পেঁয়াজ নিয়ে আসার পর কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারব।’

এদিকে গত সোমবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত দুই দিনে ৪ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

স্থলবন্দরের কাস্টমস স্টেশনের তথ্যে দেখা গেছে, গত দুই দিনে প্রতি চালানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১৩ থেকে ১৬ সেন্টে। ডলারের বিনিময় মূল্য ১০৮ টাকা ১৭ পয়সা ধরে মানভেদে আমদানি মূল্য দাঁড়ায় ১৪ থেকে ১৭ টাকা ৩০ পয়সা। গড়ে দাম কেজিপ্রতি প্রায় সাড়ে ১৫ টাকা। প্রতি কেজিতে করভার গড়ে সাড়ে ৩ টাকা। এ হিসাবে শুল্ক-করসহ পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ পড়ছে কেজিপ্রতি প্রায় ১৯ টাকা।

পেঁয়াজ আমদানি করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ বিভাগ থেকে অনুমতি নিতে হয়। এই অনুমতি নিয়ে ব্যাংকে ঋণপত্র খুলতে পারেন আমদানিকারকেরা। কৃষকদের স্বার্থে গত মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল কৃষি বিভাগ। তাই গত ১৫ মার্চ থেকে ৪ জুন পর্যন্ত দেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close