প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে
নারী মানেই এক টুকরো মাংস, তালেবানের পাশবিকতার শিকার নারীর মন্তব্য
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ‘তালেবানের চোখে নারীরা মানুষ নয়। তাঁদের কাছে নারী মানেই এক টুকরো মাংস।’ দুঃখ করে কথাগুলো বলছিলেন ৩৩ বছর বয়সী খাতিরা। গত বছর আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশে তালেবানের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছিলেন তিনি।
চিকিৎসার জন্য গত বছরের নভেম্বর থেকেই স্বামীর সঙ্গে ভারতের রাজধানী দিল্লির লাজপাট নগরে অবস্থান করছেন এই নারী। খাতিরার সঙ্গে আছে তার ছেলে-মেয়েরাও। রোববার (১৫ আগস্ট) ভারতের নিউজ–এইটটিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাতিরা জানান, হামলার ইন্ধন দিয়েছিলেন তারই বাবা। তার বাবা একজন তালেবান যোদ্ধা।
গত বছরের অক্টোবরে তালেবানের হামলার শিকার হওয়া খাতিরা আফগান বাহিনীতে পুলিশ সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হামলার সময় দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল তিন তালেবান যোদ্ধা। তারা প্রথমেই তার পরিচয়পত্র দেখতে চায়। তারপরই বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ে। গুনে গুনে আটটি গুলি বিদ্ধ হয় তার শরীরের ওপরের অংশে। পরে চাকু দিয়ে তার চোখ দুটো উপড়ে নেওয়া হয়। অচেতন খাতিরাকে মৃত ভেবেই ফেলে রেখে যায় তালেবানরা।
খাতিরা বলেন, তারা নারীদের নৃশংস উপায়ে হত্যা করে। এমনকি নারী শরীরকে কুকুরের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করে। সৌভাগ্যক্রমে আমার প্রাণটি এখনো বেঁচে আছে। তালেবানের অধীনে আফগানিস্তানে বসবাস করা নারী, শিশু আর সংখ্যালঘুরা এক নারকীয় পরিবেশের মধ্যে থাকে।’
ভারতের রাজধানী দিল্লির লাজপাট নগরে কাস্তুরবা নিকেতন এলাকাটির চেহারা গত এক সপ্তাহের মধ্যেই বদলে গেছে। গত কয়েক দিনে সেখানে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে এসে অসংখ্য মানুষ শরণার্থী জীবন শুরু করেছে। গত রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতনের পর থেকেই সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তাদের অনেকেই দেশে ফেলে আসা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।
খাতিরা বলেন, নারীদের পুরুষ চিকিৎসক দেখানোর অনুমতি দেয় না তালেবানরা। এ ছাড়া তাদের পড়াশোনা কিংবা কাজে যাওয়াও বারণ। এ অবস্থায় নারীদের মৃত্যু ছাড়া আর কিইবা করার আছে?
/আরএম