প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে

নারী পর্যটকদের ভারত ভ্রমণে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ভারতের হায়দরাবাদে এক নারী পশুচিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারার ঘটনায় ভারত এখনো উত্তাল। এ ঘটনার আগেই নারী পর্যটকদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। নারীদের জন্য ক্রমশ অনিরাপদ হয়ে ওঠা ভারতে ভ্রমণে ইচ্ছুক নারী পর্যটকদের জন্য এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রও একই ধরনের নির্দেশনা দিয়েছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের কোনো নাগরিক ভারতে গিয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হলে তাঁকে কী করতে হবে, মূলত এ বিষয়েই নির্দেশনাটি জারি করা হয়েছিল। গত ২৬ নভেম্বর নিজেদের ওয়েবসাইটে ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য এই সতর্কতা জারি করে যুক্তরাজ্য। এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রও ভারত ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছিল। নিরাপত্তার দিক থেকে ভারতকে ‘লেভেল-২’-এ ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ব্রিটিশ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভারতে গিয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি পুলিশ সেবা নম্বর ১০০-তে ফোন দিতে হবে। পুরুষ কর্মকর্তার পরিবর্তে নারী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানানোর ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নির্যাতনের শিকার নারীকে অবশ্যই থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানাতে হবে। স্থানীয় পুলিশ ইংরেজিতে অভিযোগ লিখতে বাধ্য নয়, তবে সই করার আগে অভিযোগের ব্যাপারে কী লেখা হলো, সেটি অবশ্যই অভিযোগকারীকে ইংরেজিতে অনুবাদ করে পড়ে শোনাতে হবে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের প্রভাষক কার্তিকেয় ত্রিপতী বলেছেন, ‘কোনো ব্রিটিশ নাগরিক যদি ভারতে গিয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হন, তাহলে এটি তাঁর অধিকার যে তিনি নারী পুলিশ কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানাবেন। এই অধিকার সম্পর্কে অনেক নারীই জানেন না।’

যুক্তরাজ্য সরকারের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, পুলিশের পাশাপাশি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও অভিযোগ জানাতে হবে। তদন্তকাজের জন্য ওই ঘটনার সময় পরিধেয় সব পোশাক পুলিশ নিজেদের জিম্মায় রাখতে পারবে। থানা কিংবা হাসপাতালে যাওয়ার সময় সঙ্গে অতিরিক্ত পোশাক রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে, ‘নির্যাতনের শিকার নারীকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পুলিশ কোনো সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাবে। সাধারণত কোনো নারী পুলিশ কর্মকর্তা কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এই পরীক্ষা হওয়ার কথা। ঘটনার সময় কী হয়েছিল, সে ব্যাপারে চিকিৎসকের কাছে বিবৃতিও দিতে হবে।’

গত বুধবার রাতে ভারতের তেলেঙ্গানার রাজধানী হায়দরাবাদে ২৭ বছরের ওই তরুণী পশুচিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার বীভৎসতায় ফুঁসে উঠেছে গোটা ভারত। চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁরা পুলিশের গুলিতে নিহত হন। পুলিশের ভাষ্য, ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে চার সন্দেহভাজন নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close