করোনাকৃষিশিল্প-বানিজ্য

ধানের মাঠে কাস্তে হাতে স্বেচ্ছাসেবী

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ করোনা আতঙ্ক, শ্রমিক সংকট আর আগাম বন্যার শঙ্কার মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে বোরো ধান কাটার কাজ। নানামুখী এই সংকটের মুহূর্তে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের জমির পাকা ধান স্বেচ্ছাশ্রমে কেটে দিচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশ সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবীরা। এ ব্যাপারে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

মাগুরা : করোনা পরিস্থিতিতে কৃষকদের উৎসাহ জোগাতে গতকাল রবিবার দুপুরে মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম নিজে ধান কেটে সদর উপজেলার কাশিনাথপুর উত্তর পাড়া এলাকার একটি মাঠে শস্য কর্তনের উদ্বোধন করেছেন। মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাহিদুল আমিন জানান, এবার মাগুরায় ১৮ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে।

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) : জগন্নাথপুরের ছোট ছোট হাওরের বোরো ধান কাটার কাজ এখন শেষের দিকে। তবে জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরে এখন পুরোদমে ধান কাটা চলছে। স্থানীয় কৃষি অফিস জানিয়েছে, চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে জগন্নাথপুরের সব হাওরে ধান কাটা শেষ হবে। গতকাল রবিবার পর্যন্ত ৬৭ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের জমির পাকা ধান কেটে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) : গতকাল সকালে তাড়াশের দেশীগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৫ নেতাকর্মী স্বেচ্ছাশ্রমে দিনভর ধান কাটায় অংশ নেন।

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) : করোনার এই দুঃসময়ে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিৎ রায় দাশ। তিনি গত শনিবার স্থানীয় কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কৃষকের ধান কাটেন।

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) : পুলিশের সহায়তায় গতকাল রবিবার সকালে প্রায় ৫০০ শ্রমিক ধান কাটার জন্য বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট সন্ন্যাসী পুলিশ ফাঁড়ি ও পঞ্চকরণ থেকে বরিশাল ও গোপালগঞ্জের উদ্দেশে জলপথে এই শ্রমিক পাঠানো হয়।

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : করোনাভাইরাসের কারণে বগুড়ার নন্দীগ্রামে ইরি-বোরো ফসল ঘরে তুলতে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে পারে। এই আশঙ্কায় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ফসল কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে।

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) : নাঙ্গলকোটে করোনার কারণে ঘরবন্দি কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আউশ ধানের বীজ পৌঁছে দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) : দেশের নানা স্থানে ধান কাটতে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছে কাজিপুরের ৩১ জন শ্রমিক। দুই ধাপে তাদের নিজ উপজেলা ও জেলার বাইরে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে নিয়ম মেনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে শ্রমিকদের করোনা চেকআপ করা হয়েছে।

পীরগাছা (রংপুর) : কিছুদিনের মধ্যেই রংপুরের পীরগাছায় পুরোদমে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হবে। করোনা পরিস্থতিতে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে পারে। তাই ক্ষেতের ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। এ অবস্থায় কৃষকদের মাঝে সরকারি ভর্তুকি দামে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করেছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close