দেশজুড়ে
ধর্ষিতা কলেজছাত্রীকে দেহ ব্যবসায়ী প্রমাণের চেষ্টা আ.লীগ নেতার
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ টাঙ্গাইলে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের পর উল্টো তাকে দেহ ও মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দেয়াসহ তথ্য লোপাট, প্রতারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান, মানহানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম ও ধুবড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রঙ্গু, ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহাবুল আলম দুলাল এবং ধুবড়িয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান শাকিল।
উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের ওই কলেজছাত্রীর বাবা গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) টাঙ্গাইলের নাগরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সিআইডিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সুত্রে জানা যায়, গত বছরের ১২ জুলাই সারটিয়াগাজি গ্রামের জবেদারের ছেলে জুয়েল এক কলেজছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনার পর ওই ছাত্রীর বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়ামের সঙ্গে দেখা করে এর প্রতিকার চান। ধর্ষক জুয়েল তার কর্মচারি ও অন্যান্য সহযোগীরা তার কাছের লোক। এ ঘটনায় প্রতিকার তো দূরের কথা, উল্টো তিনি ভিকটিমের বাবাকে বলেন, এরকম ঘটনা ঘটেই থাকে। তুমি এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না, করলে সুবিধা করতে পারবে না।
উইলিয়ামের প্রভাবে এ ঘটনায় নাগরপুর থানার পুলিশ ধর্ষণের মামলা গ্রহণ করেনি। নিরূপায় হয়ে পরে থর্ষিতার বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করেন। সেই থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদীকে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসছে আসামিরা।
এছাড়া আসামিদের নির্দোষ প্রমাণের জন্য ধুবড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান তার প্যাডে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে উল্টো ধর্ষিতাকে দেহ ও মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দেন। সেই সঙ্গে হ্যান্ডবিল ও পোষ্টার ছাপিয়ে বিলি করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে ধর্ষক জুয়েল রানা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়ামের কর্মচারী ও অনুসারী হওয়ায় তাকে মামলা থেকে রেহাই দিতে ধর্ষিতার পরিবারকে ব্যাপক চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়াসহ বাদীকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ পাওয়া গেছে আসামিদের বিরুদ্ধে।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম বলেন, ‘সমাজে আমার সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য মামলাটি করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন’।