দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
ধর্ষণে ১০ বছর বয়সে মা হলো শিশুটি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মাত্র চারদিন হয়েছে পৃথিবীর আলো দেখেছে শিশুটি। এখনো নাম রাখা হয়নি। এখন পর্যন্ত মায়ের পরিচয়ে পরিচিত সে। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি সদ্য জন্ম নেয়া এই শিশুর মায়ের বয়স ১০ বছর।
ধর্ষণের শিকার হয়ে মাত্র ১০ বছর বয়সে মা হলো শিশুটি। চারদিন আগে জন্ম নেয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে কাঁদছে সে। সন্তানের পিতৃ পরিচয় পাওয়ার জন্য স্থানীয় সালিশদারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে শিশুটি ও তার পরিবার।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর স্থানীয় সালিশদারদের কাছে বার বার গিয়েও ন্যায়বিচার পায়নি শিশুটি।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামে ওই শিশুর বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, সন্তান কোলে বসে আছে শিশুটি। মাঝে মাঝে শিশুসুলভ আচরণ করছে। কিছুক্ষণ পর পর অঝোরে কেঁদে ওঠে। এরপর সন্তানকে বিছানায় রেখে বাইরে চলে যায় শিশুটি।
নির্যাতনের শিকার শিশু ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, আট থেকে নয় মাস আগে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার শিশুটিকে ধর্ষণ করে বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের কালাম ব্যাপারীর ছেলে আক্কাস ব্যাপারী (২৫)।
ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয় আক্কাস। প্রায় পাঁচ মাস আগে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান, শিশুটি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
তার অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি স্থানীয় সালিশদারদের জানায় পরিবার। তখন শিশুটিকে বিয়ের জন্য আক্কাসকে চাপ দেয়া হয়। কিন্তু আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার জন্য নির্যাতিত শিশুটির পরিবারকে প্রস্তাব দেয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এ অবস্থায় অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে শিশুটির পরিবার।
এদিকে, নির্যাতিত শিশুটিকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় আক্কাস। এরপর নিরূপায় হয়ে মামলা করে শিশুটির পরিবার। এরই মধ্যে গত বুধবার রাতে ছেলেসন্তানের জন্ম দেয় নির্যাতিত শিশুটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আক্কাস ব্যাপারীর বাবা কালাম ব্যাপারী বলেন, আমার সম্মানহানি করার জন্য এলাকার একটি কুচক্রী মহল এসব কথা রটিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই মেয়েটির পরিবার আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলার পর থেকে আমার ছেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ওই মেয়েটির সন্তানের বাবা আমার ছেলের নয়।
তবে হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বলেছেন, শুরু থেকেই আমরা বিষয়টি জানি। বিষয়টি সমাধানের জন্য ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে বিয়ের জন্য আক্কাস ব্যাপারীকে বলেছি। কিন্তু এতে আক্কাস রাজি হয়নি। পরে নির্যাতিত শিশুটির পরিবারটিকে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য বলেছি এবং সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এরই মধ্যে মামলা হওয়ার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় আক্কাস।