দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
ধর্ষণে শিশু অন্তঃসত্ত্বা; আত্মহত্যা করলো ধর্ষক
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ রংপুরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী। আর ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষকের মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। কীটনাশকপানে ওই ধর্ষক আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করা হলেও ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনার পেছনে তৃতীয় কোনো পক্ষ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কিছু বলতে না চাচ্ছে না পুলিশ।
এদিকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটি বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মা বাদী হয়ে নগরীর হাজিরহাট থানায় মামলা করেছেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রংপুর নগরীর নজিরেরহাট এলাকার সোনার বাংলা নার্সারি ও এগ্রোবাংলা লিমিটেডে কেয়ারটেকার হিসেবে প্রায় ৩ বছর ধরে কাজ করতেন সদর উপজেলার চন্দপাট ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর সরদারপাড়া গ্রামের মৃত খেতু শেখের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (৫৫)। সেখানে তার রান্নাবান্নার কাজ করতেন ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মা।
মায়ের কাজ করার সুবাদে মেয়েও সেখানে যাতায়াত করত। এরইমধ্যে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর দেখা যায় মেয়েটি ২৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। তাৎক্ষণিক মেয়েটিকে নজিরেরহাট এলাকার ল্যাপরোসি মিশনে ভর্তি করা হয়।
অপরদিকে শিশুটির অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার খবর জানাজানি হলে এ ঘটনার সঙ্গে তোফাজ্জল হোসেন জড়িত বলে প্রচার হতে থাকে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) নার্সারিতে কীটনাশক পানে তোফাজ্জল আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার মরদেহ নিয়ে এসে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়।
এরপর ধর্ষণের শিকার মেয়েটির মা বাদী হয়ে গত ১৮ আগস্ট হাজিরহাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের অভিযুক্ত করে ধর্ষণ মামলা করেন।
ল্যাপরোসি মিশনে কর্মরত প্রমিলা হেমব্রম মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে শিশুটি তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তার শারীরিক বিষয়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
শিশুটির মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ল্যাপরোসি মিশনে কর্মরত প্রমিলা হেমব্রম জানান, মেয়েটির মা সেখানে (ল্যাপরোসি মিশনে) রয়েছেন। কথা বলতে চাইলে তিনি (প্রমিলা হেমব্রম) যোগাযোগ করিয়ে দিতে রাজি হননি।
চন্দনপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেনকে একজন ভালো ব্যক্তি হিসেবে জানতাম। তার বিরুদ্ধে একটি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনি প্রকৃত দোষি নাকি অন্য কেউ জড়িত তা খতিয়ে দেখা দরকার।
হাজিরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমরা গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করছি। আশা করছি শিগগিরই এর রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। আর তা হলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হবে।