বিশ্বজুড়ে

ধর্ষকদের ফাঁসি ২২ জানুয়ারি; কেঁদে ক্ষমা চাইলেও মন গলবে না

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সাত বছরেরও বেশি আগে চলন্ত বাসে নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছিল মেডিকেল ছাত্রীকে। ‘নির্ভয়া’ নামে পরিচিতি পাওয়া সেই তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আগামী ২২ শে জানুয়ারি সকাল ৭ টায় ৪ আসামি পবন গুপ্ত, মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা এবং অক্ষয় ঠাকুর সিংহকে ফাঁসিতে ঝোলানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর আগে নির্ভয়ার পরিবার যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করতে আর্জি জানিয়েছিলো।

আদালতের রায় ঘোষণা দেরি হলে, মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। বিচারককে প্রশ্ন করেছিলেন, যেখানেই যাচ্ছি অপরাধীদের অধিকারের কথা শোনানো হচ্ছে আমাদের। আমাদের অধিকারের কী হবে? আইনের কাছে তাদেরও হাত-পা বাঁধা বলে সেসময় সান্ত্বনা দিয়েছিলেন বিচারক।

মৃত্যুদণ্ডের সাজা বজায় থাকায় পর নির্ভয়ার মা বলেছেন, সাত বছর ধরে কেঁদেছি আমি। চোখের জল শুকিয়ে গেছে। পাথর হয়ে গেছি। এখন কেউ এসে কেঁদে ক্ষমা চাইলেও মন গলবে না। আমার মেয়েটার সঙ্গে যা হয়েছে সেটা কোনোদিন ভুলতে পারব না। এটাই স্বস্তি, অন্তত মেয়েটা বিচার পাবে।

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনা ভারতের পাশাপাশি গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় ভুক্তভোগীকে। পরে ওই নৃশংস ধর্ষণের ঘটনা ‘নির্ভয়া কাণ্ড’ নামে পরিচিতি পায়।

আদালতে সাজা ঘোষণার আগে নির্ভয়ার মায়ের সামনে এক দোষীর মা কান্না শুরু করেন। ছেলের প্রাণভিক্ষাও চান তিনি। তবে নির্ভয়ার মায়ের নির্বিকার জবাব ছিল, আমার সঙ্গে যা হয়েছে ভুলতে পারব না। যে অবস্থায় মেয়েকে হাসপাতালে দেখেছিলাম তা যে কতটা ভয়ানক হতে পারে হয়তো সেটা আন্দাজও করতে পারবে না কেউ। কোনো হিংস্র জানোয়ার ছিঁড়ে খেলেও বোধহয় আমার মেয়েটার এমন হাল হতো না।

নির্ভয়ার মা-বাবা বলেন, দেশের সব মেয়ের জন্যই এ রায় দরকার ছিল। সাত বছর আগে নিজের মেয়েকে হারিয়েছি। আমাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন আর কারও সাথে না হয়। সাত বছর ধরে তিলে তিলে মরছি। দোষীদের চরমতম শাস্তির আশায় এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম। এবার মেয়েটা বিচার পাবে। এবার অন্তত অপরাধীরা ভয় পাবে।

উল্লেখ্য, নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ছয়জন দোষীর মধ্যে একজন আগেই জেলের মধ্যে আত্মহত্যা করেছিল। ঘটনার সময় নাবালক থাকায় কয়েকবছর জেল খেটে ছাড়া পেয়েছে একজন। বাকি চারজনের ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত। রায় অনুযায়ী ২২ জানুয়ারি তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close