আমদানি-রপ্তানীদেশজুড়েশিল্প-বানিজ্য
দেশে সোনা পরিশোধন করতে চাইলে ৩০ লক্ষ টাকা ফি দিতে হবে
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সোনা আমদানির বৈধ-পথের সুযোগ তেমন একটা না থাকায় দেশের সোনার বাজার ও জুয়েলারি ব্যবসার স্বচ্ছতা নিয়ে নানা সময়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে চূড়ান্ত হয় ‘স্বর্ণ নীতিমালা ২০১৮’। ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ আমদানির জন্য লাইসেন্স দেয়। পরে আরেকটি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পায়। কিন্তু স্বর্ণ আমদানির শুল্কসহ নানা জটিলতায় আমদানিতে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
২০২০ সালের জুনে ঘোষিত বাজেটে ২০ শতাংশ কর প্রত্যাহার করার পর সে বছরই ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডসহ আরেকটি প্রতিষ্ঠান মোট ২৬ কেজি স্বর্ণকার আমদানি করে। তবে দেশের একটি বড় শিল্প-গ্রুপ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সোনা পরিশোধন কারখানা স্থাপনে আগ্রহের কথা জানিয়ে আবেদন করলে আবারো স্বর্ণ নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের ২ জুন সংশোধিত নীতিমালায় স্বর্ণ পরিশোধনে আকরিক ও আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানির সুযোগ যুক্ত করা হয়।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি প্রক্রিয়ার অনুমোদনের বিস্তারিত তুলে ধরে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বৃহস্পতিবার ( ১ জুলাই)।
যেখানে বলা হয়েছে, সোনা পরিশোধনের কারখানা স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। অনুমোদনের শর্তানুযায়ী, নির্ধারিত স্থানে সোনা পরিশোধনগার স্থাপন করতে হবে। অন্যান্য সব ধরনের লাইসেন্সের পাশাপাশি সোনা পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার অনুমোদিত ব্যবসায়ী সংগঠনের বৈধ সদস্য হতে হবে। প্রতিষ্ঠানটিকে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় নির্ধারিত আর্থিক সক্ষমতা থাকতে হবে। আকরিক ও আংশিক পরিশোধিত সোনা সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে কারখানায়। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে মানসম্পন্ন মোবাইল, টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়মিত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারে। আমদানিকারক হিসেবে অনুমতির আবেদনের সাথে ৩০ লক্ষ টাকার ফি পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংককে।
অপরিশোধিত সোনা কারখানায় পরিশোধনের মাধ্যমে সোনার বার ও কয়েন উৎপাদন করা যাবে। যা সরাসরি রপ্তানির পাশাপাশি দেশে অলংকার তৈরির পর অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো কিংবা বিদেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য বিশ্ববাজারে হাতে তৈরি গহনার ব্যাপক চাহিদা আছে। ভারত এমন গহনা রপ্তানিতে শীর্ষে। বাংলাদেশও হাতে তৈরি গহনার বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে বড় অংকের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন স্বর্ণ শিল্প সংশ্লিষ্টরা।