দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
দেশে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে ভোটকক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৫ জুন। ভোটগ্রহণ কার্যক্রমকে আরও নিরাপদ করতে এবার প্রতিটি কেন্দ্রে ও ভোটকক্ষে লাগানো হবে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। ক্যামেরায় কেন্দ্রগুলো ভোটের আগের দিন থেকে শুরু করে পরদিন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হবে। পর্যবেক্ষণে থাকবেন নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন।
দেশে প্রথমবারের মতো কুসিক নির্বাচনেই ভোট গ্রহণের সময় সিসিটিভি ক্যামেরা রাখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রার্থীরা। অনেকে বলছেন, ইসির ওপর আস্থা তৈরিতে সিদ্ধান্তটি কার্যকর হবে। তবে পর্যবেক্ষকদের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ১০৫টি কেন্দ্র ও ৬৪০টি ভোট কক্ষ রয়েছে। পুলিশ ঝুঁকিপূর্ণ বা কম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা করেছে। নির্ধারিত কেন্দ্রগুলো গেজেটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। এই প্রতিটি কেন্দ্র ও ভোটকক্ষকে এবার সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে।
প্রার্থীদের সবাই এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। কুসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনকে আমি সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি ভোটারদের গোপনীয়তার বিষয়টিও দেখতে হবে। সিসি ক্যামেরার কারণে যদি ভোটারদের গোপনীয়তা রক্ষা না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
বিএনপিপন্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘নির্বাচনী কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই মনে হয় প্রথম। শুনেছি নির্বাচনের আগের দিন এটা বসানো হবে, পরদিন খুলে আনবে। এটা একটা ভালো উদ্যোগ। কথা কাজে মিল থাকলে এর চেয়ে ভালো সুযোগ হতে পারে না।’
আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আফজল খানের ছেলে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এটি একটি ভালো উদ্যোগ। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে। এতে সুষ্ঠু সুন্দর ভোট হবে। শুনেছি নির্বাচনের দায়িত্বে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যরা খুবই আন্তরিক, মার্জিত ও মেধাবী। আশা করি তাঁদের তত্ত্বাবধানে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’
তবে প্রার্থীদেরও পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন আরেক বিএনপিপন্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করছে; এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। এই সিসি ক্যামেরাগুলো অনলাইন (স্ট্রিম) করে আমরা যারা প্রার্থী তাঁদের যদি পাসওয়ার্ড দিয়ে আমাদের দেখার ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে আমরা আমাদের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে বসে প্রতিটি কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করতে পারি। সে ক্ষেত্রে বুঝব যে, কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে নয়, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
ভোটাররা প্রাথমিকভাবে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও এ নিয়ে কিছু সংশয়ও প্রকাশ করেছেন। ভোটারদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। সঙ্গে এসেছে পর্যবেক্ষক কারা হবেন এবং তাঁদের ভূমিকার প্রসঙ্গটি।
এ বিষয়ে নগরীর ভোটার ও ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের স্বচ্ছতা প্রমাণের জন্য কিছু নিজস্ব উদ্যোগ নিতে পারে। কুসিক নির্বাচন তাদের (এই কমিশনের) প্রথম নির্বাচন। তারা যদি মনে করে যে, সিসি ক্যামেরা বসিয়ে স্বচ্ছতা ও ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে পারবে, তাহলে এটা ভালো উদ্যোগ।’
নগরীর ভোটার এবং লেখক ও গবেষক আহসানুল হক বলেন, ‘একজন ভোটার হিসেবে একে শঙ্কা নয়, আশার জায়গা থেকে দেখতে চাই। মানুষের ভোটাধিকার রক্ষায় এটি ব্যবহার হবে বলে বিশ্বাস করি।’
/আরএম