করোনাদেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
Trending

দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ২৬ জেলা এখন লকডাউন

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ দেশের এক–তৃতীয়াংশের বেশি জেলা এখন লকডাউন (অবরুদ্ধ)। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনই লকডাউন করা জেলার সংখ্যা বাড়ছে।

গত দুই দিনে আরও পাঁচ জেলা এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার লকডাউন করা হয় গোপালগঞ্জ, নীলফামারী ও ময়মনসিংহ জেলা। আর গতকাল বুধবার লকডাউনের তালিকায় যুক্ত হয় শরীয়তপুর, দিনাজপুর ও নওগাঁ জেলা। সব মিলিয়ে ৬৪টি জেলার মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৬টি জেলা লকডাউন করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের আরও ৬ উপজেলায় লকডাউন চলছে।

/আরএম

এসব এলাকায় সড়ক ও নৌপথে প্রবেশ এবং বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কড়াকড়ি করা হয়েছে জেলার অভ্যন্তরের যাতায়াতেও।

৭ এপ্রিল প্রথম নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলা লকডাউন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, রাজবাড়ী, সুনামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, কক্সবাজার, নরসিংদী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, গাইবান্ধা, চাঁদপুর, পিরোজপুর ও সাতক্ষীরা জেলা লকডাউন করা হয়। এ ছাড়া পটুয়াখালীর দুমকি, মাদারীপুরের শিবচর, বরগুনার আমতলী, ঢাকার সাভার, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলাতেও লকডাউন চলছে। নতুন করে গতকাল চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়ার পর পুরো গোপালগঞ্জই লকডাউন
টুঙ্গিপাড়ার দুটি গ্রামে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ১২ এপ্রিল উপজেলাটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। পরদিন সদর উপজেলায় তিন ব্যক্তি এবং মুকসুদপুরে পুলিশের তিন সদস্য শনাক্ত হন। এরপর গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে পুরো গোপালগঞ্জই লকডাউন করে দেয় জেলা প্রশাসন।

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ কার্যকর থাকবে বলে জানান গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা।

গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মাদ জানান, ১৬৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৯ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

নীলফামারী লকডাউন
নীলফামারীতে গতকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ছয় ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসক ও তিনজন শিক্ষার্থী রয়েছেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলা লকডাউন ঘোষণা করে মাইকিং করা হয়। অবশ্য এর আগে ১০ এপ্রিল এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলায় সব ধরনের গণপরিবহন প্রবেশ ও বহির্গমন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘এর আগে গণবিজ্ঞপ্তিতে যেসব নির্দেশনা দেওয়া ছিল, সেটি মূলত লকডাউনের মধ্যেই পড়ে। তবে আতঙ্ক এড়ানোর জন্য তখন লকডাউন শব্দটি ব্যবহার করিনি। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনগণের নিরাপত্তায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।’

ময়মনসিংহ ১০ জন আক্রান্ত, লকডাউন
ময়মনসিংহে গতকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১০ জন। তাঁদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসক ও একজন পুলিশ সদস্য। গত সোমবার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে পালিয়ে এসে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নিতে এসে ধরা পড়েন একজন।

এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে ময়মনসিংহ জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান জানান, করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ময়মনসিংহ জেলার সঙ্গে অন্য জেলার যোগাযোগ বন্ধ থাকবে। ময়মনসিংহে কেউ আসতেও পারবেন না, কেউ বাইরেও যেতে পারবেন না।

শরীয়তপুর
শরীয়তপুরের পার্শ্ববর্তী সব জেলাতেই করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় শরীয়তপুরে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে জেলাকে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে প্রতিদিন নৌপথে মানুষ শরীয়তপুরে গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন। তাঁদের শনাক্ত করে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে অনির্দিষ্ট–কালের জন্য লকডাউন করে দেওয়া হয় জেলাটি।

জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, জেলায় করোনার বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ সবাই সম্মিলিতভাবে লকডাউন কার্যকর করতে কাজ করবে। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শরীয়তপুরে এ পর্যন্ত চারজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন ঢাকা ও তিনজন নারায়ণগঞ্জ থেকে সম্প্রতি শরীয়তপুরে এসেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close