দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের বিচারের জন্য বিচারকের সংখ্যা প্রায় ১৮শ’ জন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ দেশের আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় ৩৭ লাখ। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে মামলা। সেই তুলনায় বাড়ছে না বিচারকের সংখ্যা। দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের বিচারের জন্য বিচারকের সংখ্যা প্রায় ১৮শ’ জন। আর বিচারকের সংখ্যা জনসংখ্যার তুলনায় অনেক কম হওয়ায় বাড়ছে মামলা জট। একইসঙ্গে মামলা নিষ্পত্তিতে দেরি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন বিচার প্রার্থীরা।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের অধস্তন আদালতে (জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত) বিচারকের পদের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন এক হাজার ৮১২ জন। সেই হিসাবে প্রায় একশ’ ৮৮টি পদ খালি রয়েছে। এদের মধ্যে জেলা জজ পদমর্যাদায় ৩৪ জন, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে ২১ জন এবং সাইবার অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৭টি পদ খালি রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭২৮টি। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন আছে ২৩ হাজার ৬১৭টি। হাইকোর্ট বিভাগে রয়েছে চার লাখ ৮৯ হাজার ৬৮টি মামলা। অধস্তন আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩১ লাখ ৭২ হাজার ৪৩টি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জনসংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশের বিচারকের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য দেশে মাত্র একজন বিচারক রয়েছেন। যেখানে আমেরিকায় ১০ লাখ মানুষের জন্য ১০৭ জন, কানাডায় ৭৫ জন, ইংল্যান্ডে ৫১ জন, অস্ট্রেলিয়ায় ৪১ জন, ভারতে ১৮ জন বিচারক। অথচ বাংলাদেশে ১০ লাখ মানুষের জন্য মাত্র ১০ জন বিচারক রয়েছেন।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, আপিল বিভাগে বিচারকপ্রতি রয়েছে তিন হাজার ৯৩৬টি মামলা এবং হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকপ্রতি রয়েছে পাঁচ হাজার ৪১টি মামলা। অধস্তন আদালতে বিচারকপ্রতি এক হাজার ৭৫০টি মামলা আছে। তথ্য মতে, ২০১৪ সালে আইন কমিশন অধস্তন আদালতের জন্য তিন হাজার বিচারক নিয়োগের সুপারিশ করলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দেশের বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। বর্তমানে প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য মাত্র একজন বিচারক রয়েছেন। তবে সারাদেশের অধস্তন আদালতের শূন্য পদের নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি শিগগিরই এই প্রক্রিয়া শেষ হবে।
এতো অল্পসংখ্যক বিচারক দিয়ে মামলার জট কমানো সম্ভব নয় বলে আইনজীবীরা মনে করছেন। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনীতির ঊর্ধ্বে যেয়ে সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের বিচারক নিয়োগ দেবেন। এতে সাধারণ বিচার প্রার্থীরা ন্যায্য বিচার পাবেন এবং আইনের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।
/এন এইচ