আমদানি-রপ্তানীশিল্প-বানিজ্য

দেশীয় পণ্য নিশ্চিত করতে শুল্ক বসল দুই শতাধিক পণ্যে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ আমদানি ব্যয়ে লাগাম টানতে এবং দেশীয় পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিদেশি ফুল ও ফল, ফার্নিচার এবং কসমেটিকস আইটেমের দুই শতাধিক পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) আরোপ করা হয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারিশের পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এমন নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বিদেশি ফল, বিদেশি ফুল, ফার্নিচার ও কসমেটিকসজাতীয় প্রায় ১৩৫টি এইচএস কোডভুক্ত পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান ৩ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

গত সোমবার এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমের সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

যেসব পণ্যের দাম বাড়বে

বিদেশি ফল, বিদেশি ফুল, ফার্নিচার ও কসমেটিকসজাতীয় প্রায় ১৩৫টি পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে শূন্য ও ৩ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আমদানিতে খরচ বাড়লে দেশের বাজারেও এসব পণ্যের দাম বাড়বে।

শুল্ক আরোপ করা পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে শুকনা ও তাজা কিংবা হিমায়িত আপেল, নাশপাতি, আঙুর, কলা, আনারস, পেয়ারা, আম, তরমুজ, পেঁপে, বাদাম, কমলালেবু ও লেবুজাতীয় ফল, আলুবোখারা ইত্যাদি। এছাড়া প্রসাধনসামগ্রীর মধ্যে আছে সুগন্ধি (পারফিউম), সৌন্দর্যবর্ধনের নানা উপাদান (যেমন—সানস্ক্রিন, সান টান ইত্যাদি), হাত-পায়ের নখ কাটার প্রসাধনী, চুলের যত্ন নেয়ার প্রসাধনী, দাঁতের যত্ন নেয়ার পেস্ট ও পাউডার এবং শেভ করার প্রসাধনী। অন্যদিকে বেডরুম, রান্নাঘর ও অফিসের জন্য লোহা, কাঠ বা প্লাস্টিকের যেকোনো ধরনের আসবাব আমদানিতেও এখন থেকে বাড়তি নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক দিতে হবে। এছাড়া যেকোনো তাজা ফুল ও ফুলের গাছ আমদানিতেও বাড়তি নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসল।

মঙ্গলবার এনবিআর পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন বলেন, কভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনীতি পুনর্গঠন, বিলাসবহুল পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা ও আমদানি হ্রাসকরণ এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিদেশি ফল, বিদেশি ফুল, ফার্নিচার ও কসমেটিকসজাতীয় প্রায় ১৩৫টি এইচএস কোডভুক্ত পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শূন্য ও ৩ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা ২৩ মে থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফুল ও ফল চাষে যথেষ্ট সমৃদ্ধিশালী। এ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের ফলে দেশীয় ফুল ও ফল চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাবেন এবং ফুল ও ফল চাষে উৎসাহিত হবেন। এতে দেশের প্রান্তিক চাষিরা লাভবান হবেন এবং আমদানিনির্ভরতা কমবে। অন্যদিকে বর্তমানে দেশে উৎপাদিত ফার্নিচার ও কসমেটিকস যথেষ্ট মানসম্পন্ন এবং দেশের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ফার্নিচার ও কসমেটিকসে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের ফলে বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশীয় শিল্প বিকশিত হবে। এছাড়া এ ধরনের পণ্যের অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহ করার মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং সরকারের রাজস্ব আহরণে তা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

ঢাকা অর্থনীতি/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close