বিনোদন
দেশপ্রেম চেতনা জাগ্রত করতে মুক্তিযুদ্ধের যেসব সিনেমা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশ যখন নানা সংকটে দিশেহারা, সেই সময়ে মানুষকে দেশপ্রেমের চেতনা জাগাতে একের পর এক মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন এদেশের কিংবদন্তী পরিচালকরা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়েই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান-মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধ শিশুদের গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘ওরা ১১ জন’। ১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চাষী নজরুল ইসলামের এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক, খসরু, শাবানা, নূতন, হাসান ইমামসহ আরও অনেকে। এই সিনেমায় ১১ জন অভিনেতার ১০ জনই ছিলেন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা।
১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষীর মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের সম্মান-মর্যাদা ও যুদ্ধ শিশুদের বরণের আহ্বান জানান কিংবদন্তি পরিচালক সুভাষ দত্ত। এই চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন আনোয়ার হোসেন, উজ্জ্বল ও ববিতা।
১৯৭৩ সালে চাষী নজরুল ইসলামের চলচ্চিত্র ‘সংগ্রাম’ ছবিটি মুক্তি পায়। এই সিনেমাটির গল্প নেয়া হয়েছে সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফের ডায়েরি থেকে। নির্মাতা ও কলাকুশলীদের অনুরোধে প্যারেড গ্রাউন্ডে স্যালুট গ্রহণের একটি দৃশ্যে অভিনয় করেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সামাজিক পরিস্থিতি ও বিশৃঙ্খলার চিত্র উঠে এসেছে খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন ফারুক, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ববিতা, রোজিসহ অনেকে।
১৯৭৩ সালে আলমগীর কবিরের নির্মাতা প্রথম কাহিনীচিত্র মুক্তি পায় ‘ধীরে বহে মেঘনা’। বুলবুল আহমেদ, ববিতা, গোলাম মোস্তফা, আনোয়ার হোসেন অভিনীত এই চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতার দৃশ্যপট।
১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় হারুনুর রশীদ পরিচালিত ‘মেঘের অনেক রং’। মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের যন্ত্রণার হাহাকার ফুটে ওঠে এই চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। ‘মেঘের অনেক রং’ বাংলাদেশের দ্বিতীয় রঙিন এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম রঙিন সিনেমা।
এইসব কালজয়ী চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সদ্য স্বাধীন দেশের গণমানুষকে প্রেরণা দিয়েছিলেন চিত্রপরিচালকেরা। স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সোনার বাংলা গড়ার।