দেশজুড়ে

দুই নৌকায় পা দেওয়ার খেসারত দিচ্ছে বিএনপি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ গত বছর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০ দলীয় জোটের বাইরের কিছু রাজনৈতিক দলের সাথে নতুন জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ গঠন করেছিলো বিএনপি। ঐক্যফ্রন্ট গঠন করার পর থেকেই বিএনপির সাথে ২০ দলীয় জোটের টানাপোড়েন শুরু হয় বিভিন্ন ইস্যুতে। এরই মধ্যে এই টানাপোড়েনের জের ধরে ২০ দলের কয়েকটি শরিক ইতোমধ্যে জোট ত্যাগ করেছে। এদিকে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করলেও ২০ দলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি বিএনপি। একই সাথে ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটকে সাথে চলছিলো বিএনপির রাজনীতি। কিন্তু একই সাথে দুই জোটে নেতৃত্ব দেওয়া অর্থাৎ দুই নৌকায় পা দেয়ার খেসারত দিচ্ছে বিএনপি। ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টেও ভাঙ্গনের সুর বাজছে। আর এই ভাঙাগড়ার খেলায় বিপাকে বিএনপি।

ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিজয়ী বিএনপির এমপিদের সংসদে যোগদান ও খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ইস্যুতে বিএনপির নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে ২০ দলের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ সম্প্রতি আলাদা জোট করেছেন। ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামের এই জোটে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে জামায়াত, কল্যাণ পার্টিসহ ২০ দলের শরিক চারটি দল। বিএনপি এবং ২০ দলের অধিকাংশ শরিক দল অলি আহমদের এ আলাদা জোট গঠনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ।

এছাড়া গত ৬ মে ২০ দলের আরেক শরিক বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ জোট থেকে বেরিয়ে যান। বিএনপি নেতারা পার্থকে ফিরে আসার অনুরোধ জানালেও তিনি তার সিদ্ধান্তে অনঢ় আছেন। অপর দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব ও কোনো কর্মকাণ্ড নেই দাবি করে গত ৮ জুলাই ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে গেছেন শরিক দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। একাদশ সংসদে শরিকদের না জানিয়ে বিএনপি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণসহ নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী। ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও প্রধান দল বিএনপির কাছ থেকে ‘প্রত্যাশামাফিক’ উত্তর না পাওয়ায় জোট ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

ঐক্যফ্রন্টের ভাঙন এবং ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কের নতুন জোট গঠন নিয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা অস্বস্তিতে আছেন। ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে আগামীতে আরো কেউ বেরিয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কাও রয়েছে। পাশাপাশি দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক জিয়া বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে লন্ডনে পলাতক থাকায় দলটির মাঝে নেতৃত্বশূন্যতাও প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় বিএনপির রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেয় তা এখন দেখার অপেক্ষা।দুই নৌকায় পা দেওয়ার খেসারত দিচ্ছে বিএনপি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close