আশুলিয়াস্থানীয় সংবাদ
দীর্ঘ ২২ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রফিক গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আশুলিয়া থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আদম খান ওরফে রফিককে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার র্যাব-৯ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার অভিযানে গ্রেপ্তার হয় রফিক।
বুধবার কারওরানবাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, হাবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় ১৯৯৯ সালের ৩১ মে আর্থিক লেনদেনের জের ধরে আদম খান ভিকটিম নুরচান বেগমকে (৪০) তিন বছরের শিশু সন্তান তাজউদ্দিনের সামনে ছুরি দিয়ে রক্তাক্ত জখম করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চুনারুঘাট থানায় নুরচান বেগমের অপর ছেলে শফিক বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মুখপাত্র বলেন, ওই ঘটনার ৭/৮ মাস আগে ভিকটিমের স্বামী মারা যান। বিধবা নুরচানের মৃত্যুতে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে পিতামাতা হারা হয়ে গেলে ভিকটিমের নিকটাত্মীয় (ফুপা) ও এলাকাবাসীর আর্থিক সহায়তায় মামলাটি পরিচালনা করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গত ১৭ জুলাই ২০০২সালে আদালত আসামি আদম খানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
কিন্তু ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আইনের আওতায় আনার অভিযান পরিচালনা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৯ এর অভিযানে মঙ্গলবার আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে আদমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধার নেয়া দুই হাজার টাকা ফেরত না দিতে শিশু সন্তানের সামনে বিধবা নারীকে হত্যা করেন। এরপর গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে যায়। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ২২ বছর পলাতক জীবন কাটিয়েছে। এ সময়ে পাল্টে ফেলেন নিজের নাম-পরিচয়ও। বানিয়েছেন ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিত্তিতে র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে আদম খান জানায়, হত্যাকাণ্ডের ১ বছর আগে সে ভিকটিম নুরচান বেগমের ছেলে শফিকের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ধার নেন। তার চার পাঁচ মাস পর শফিকের পিতা অর্থাৎ ভিকটিম নুরচান বেগমের স্বামী আব্দুর রহমান মারা যান। মৃত্যুর পর নুরচান বেগমের পরিবার আর্থিক অনটনের কারণে ভিকটিম পাওনা টাকা চাইলে আদম খান টাকা না দেয়ার জন্য তালবাহানা করে। সে নুরচানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অপমান করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এসময় ভিকটিম প্রতিবেশী আছমত উল্লাহর কাছে তার তিন বছরের শিশু তাজউদ্দিনকে নিয়ে ঘটনার বিচার চাইতে গেলে আদম খান আছমত উল্লাহর বসতঘরে এসে নুরচান বেগমকে গালিগালাজ ও তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে বুকের বাম পাশে আঘাত করে। এতে ভিকটিম নুরচান বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান।
/এন এইচ