ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ভারতে লকডাউন শিথিল হতেই লম্বা লাইন দেখা গেছে মদের দোকানগুলোতে। লাইন এত দীর্ঘ যে মানুষকে সামলাতে হিমসিম খেয়েছে খোদ পুলিশ। এমনকি লাঠিচার্জও করতে হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে ৪০ দিন ধরে আরোপ থাকা লকডাউন সম্প্রতি প্রথমবারের মতো শিথিল করেছে ভারতীয় সরকার। আর তাতেই মদের দোকানে ভিড় জমে গেছে তৃষ্ণার্থ অনেক ভারতীয়র। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, ভারতে করোনাভাইরাসের কারণে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৫০০ জন, মারা গেছেন ১৪০০। এজন্য মার্চের শেষ দিকে আরোপ করা কড়া লকডাউনকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন অনেকে।
অসিত ব্যানার্জি (৫৫) নামে এক ব্যক্তি কলকাতার একটি দোকানের সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় এক মাস হয়ে গেলো নির্জনভাবে থাকতে হয়েছে। এই মহামারিতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় মদ আমাদের শক্তি যোগাবে।” কলকাতার মতো নয়া দিল্লি সহ অনেক জায়গাতেই মদের দোকানে এত ভিড় ছিল যে পুলিশ ব্যাটন ব্যবহার করেছে।
উত্তর প্রদেশ অঙ্গরাজ্যের গাজিয়াবাদে দোকান খুলতেই মাস্ক পরিহিতি বহু মানুষ জড়ো হয়। ফলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ মদের দোকান বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “একটি দোকান সকালে খুলেছিল। কিন্তু এত মানুষ জড়ো হয়েছিল যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।”
লকডাউনের তৃতীয় দফায় খুলেছে মদের দোকান। তবে করোনা সঙ্কটের সময় মদ কিনলে দিতে হবে অতিরিক্ত দাম। মঙ্গলবার থেকে ৭০ শতাংশ বেশি দামে মদ কিনতে হবে দিল্লিবাসীদের। দিল্লি সরকার সোমবার রাতে এই ঘোষণা করেছে। অতিরিক্ত এই মাসুলকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল বলেছেন, ‘স্পেশ্যাল করোনা ফি’। সুরাপায়ীদের জন্য সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা অবধি মদের দোকান খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
লকডাউনের জেরে দুর্বল হচ্ছে রাজ্যের কোষাগার। মদের দামে অতিরিক্ত মাসুল বসিয়ে সেই ফাঁক বোজাতে চাইছে সরকার। রবিবার অরবিন্দ কেজরীবাল জানিয়েছিলেন, এপ্রিল ২০১৯-এ সরকারের রোজগার ছিল তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সেখানে ২০২০-র এপ্রিলে রোজগার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩০০ কোটি টাকা।
৭০ শতাংশ এই বৃদ্ধির ফলে, যে মদের এমআরপি রয়েছে এক হাজার টাকা, দিল্লিতে সেই মদ কিনতে দিতে মঙ্গলবার থেকে দিতে হবে এক হাজার ৭০০ টাকা। তবে শুধু দিল্লি নয়, পশ্চিমবঙ্গের সুরাপ্রেমীদেরও মদ কিনলে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত মাসুল। দামের উপর ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত বিক্রয় কর নেওয়া হচ্ছে এখানে।
/আরএম