অন্যদিকেপ্রধান শিরোনাম
তিমি’র আত্মহত্যার রহস্য উদঘাটন (ভিডিও)
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মানুষ বা প্রাণী আবেগে ভরপুর। প্রাণীদেরও জীবনের নানা চড়াই-উৎরাই পার করেই বেঁচে থাকতে হয়। সম্প্রতি তিমির আত্মহত্যার কথা অনেক বেশি শোনা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, সঙ্গীর শোকে তিমিরা আত্মহত্যা করছে। বিষয়টা কতখানি সত্য? তা নিয়ে নানা রকম মতভেদ দেখা গেছে।
তিমি সাধারণত জোড়া বেঁধে চলতে পছন্দ করে। নারী-পুরুষ একজন আরেকজনকে সহজে ছেড়ে যায় না। আহত হলে অন্যজন তাকে সার্বিক সহযোগিতা দেয় সারাক্ষণ। এটা তিমির সহজাত প্রবৃত্তি। তবে একজন মারা গেলে অন্যজন আত্মহত্যা করে কিনা তা বিজ্ঞানীদের মধ্যে এখনও বিভ্রান্তি রয়েছে। বিষয়টি বলতে গেলে একপ্রকার অমীমাংসিতই।
তবে দূষণ, আহত হওয়া বা অন্য কোনো কারণে তিমিদের গভীর সমুদ্র থেকে সৈকতমুখী যাত্রা করা ও নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার যে প্রবণতা, তাকে সাধারণত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব বা হাইপোথিসিস অনুযায়ী ‘হোয়েল স্ট্র্যান্ডিং ইভেন্ট’ বা তিমিদের আত্মহত্যা বলা হয়।
তিমির আত্মহত্যার এই পরিভাষাটি ২ হাজার বছরের পুরাতন। ২০১৫ সালে বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ চিলির পাতাগোনিয়াতে ৩৩৭টি মৃত তিমি পান। যা বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও তিমিদের সবচেয়ে বড় আত্মহত্যার ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক’র এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ঘটনাটি। সেখানে বলা হয় ডলফিন, তিমি বা অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর শ্বাস নেয়ার জন্য ওপরে ওঠে আসে। আবার শিকারের জন্য তারা সাগরের অনেক গভীরে চলে যায়। এমনকি তারা এক কিলোমিটার নিচে যেয়েও শিকার ধরে আনতে পারে। কিন্তু ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে বা যথাযথভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে ব্যর্থ হলে তিমিরা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় তারা জোয়ারের সঙ্গে সৈকতের দিকে আসতে থাকে এবং সৈকতে এসে আটকা পড়ে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে পড়ে। অসুস্থতার কারণে শ্বাস গ্রহণে বাধা পেয়েও তিমির মৃত্যু হয়। বিশ্বব্যাপী তিমি মৃত্যুর অর্ধেক কারণ সৈকতমুখী যাত্রা করা।
এছাড়া শিপিংয়ের শব্দ দূষণসহ বেশ কিছু কারণে তিমিরা সৈকতমুখী হয় বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অসুস্থ তিমির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে না সুস্থ তিমিটি। সামাজিক এই দায়বদ্ধতা থেকে অসুস্থ তিমির সঙ্গে সুস্থ তিমিও সৈকতের দিকে নিজেকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। তিমিদের এই প্রবণতাকে বিজ্ঞানীরা ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে দেখে।
ভিডিও দেখুনঃ