স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু ; জেনে নিন চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: DENGUE বা ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত এডিস মশাবাহিত রোগ। যা আক্রান্ত মানুষের শরীর থেকে অন্য মানুষের শরীরে ছড়ায়। এটা বাচ্চাদের ও বয়স্ক মানুষদের জন্য অত্যন্ত ভয়ানক। এই সিজনে শিশু এবং বয়স্ক মানুষের জ্বর শুরু হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গু ভাইরাসের Incubation Period ৪-১০ দিন অর্থাৎ শরীরে ঢোকার ৪-১০ দিনের মধ্যে উপসর্গ প্রকাশ পাবে। কারো ক্ষেত্রে বেশী, কারো ক্ষেত্রে কম এবং কারো ক্ষেত্রে কোন উপসর্গ নাও থাকতে পারে।

বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চা যত ছোট হয় উপসর্গ ততই সাংঘাতিক হয় এবং অনেক সময় উপসর্গ বাবা মা বুঝতে পারেন না। তাই বাচ্চার তীব্র জ্বর থাকলে অবশ্যই দেরী না করে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

কী কী উপসর্গ দেখলে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে:

১. High Grade Fever বা উচ্চ তাপমাত্রাঃ যদি জ্বর ১০১-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং ২৪ ঘণ্টা থেকে বেশী সময় ধরে থাকে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এসময় হালকা কুসুম গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে গা টা মুছে দিতে পারেন।

২. বাচ্চা প্রচন্ড অস্থিরতা দেখাবে। মাথা বা শরীরের ব্যথায় বাচ্চা অতিরিক্ত কান্নাকাটি বা বিরক্ত করতে পারে। শরীরটা মুছিয়ে দিলে কিছু আরাম পেতে পারে।

৩. ত্বকে রেস হতে পারে। রক্তের ছোপের মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেস দেখলে অবশ্যই চিকিৎসকেরছকাছে নিয়ে ডেঙ্গু এবং অন্যান্য টেস্ট করিয়ে ফেলবেন

৪. সারা শরীরে লালচে দানা দেখা দিতে পারে। এ সময় শিশু একেবারে নিস্তেজ হয়ে যায়। এরকম হলে হামের সাথে ভুল হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ লাগাবেন না বা দিবেন না।

৫. অনেক সময় মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাতের চিহ্ন দেখা যায়। কাশির সাথে কিংবা প্রসাবের সাথেও রক্ত আসতে পারে। ঠান্ডা এবং এলার্জিজাতীয় খাদ্য পরিহার করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন

৬. বাচ্চাদের মধ্যে বিরক্তিভাব ও ব্যবহারিক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। ওরা খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যায় ও প্রায়শই দেখা গেছে ওদের খিদে কমে যায়। এসময় ওদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে।

৭. পানি শূন্যতা দেখা যায়। যার কারণে হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য। বাচ্চার চামড়া খসখসে হয়ে যেতে পারে। প্রচুর পরিমাণে তরল খাওয়াবেন এবং আধা লিটার পানিতে এক প্যাকেট স্যালাইন গুলিয়ে বয়স ও চিকিৎসকের সরামর্শ অনুযায়ী

৮. এছাড়া শ্বাসকষ্টও হতে পারে। চিকিৎসক বুকের এক্স রে সহ বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা দিতে পারেন। এমনকি করোনা পরীক্ষাও।

অনেক সময় সচেতনতার বা জানার অভাবে মানুষ জ্বরকে অবহেলা করে এবং গ্রাম্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ের সবথেকে খারাপ দুটো রোগ COVID 19 এবং ডেঙ্গু রোগের উপসর্গ হচ্ছে তীব্র জ্বর। সুতরাং হেলাফেলা না করে চিকিৎসককে অবশ্যই দেখাতে হবে।

লেখক: ডাঃ আসিফ আব্দুল্লাহ
এমবিবিএস, এমপিএইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close