স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু জ্বর এড়াতে করণীয় কি?

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বর্ষা যেমন রূপের পসরা নিয়ে আসে, তেমনই সঙ্গে করে নিয়ে আসে কিছু অসুবিধাও। এই সময়ে নানা রোগের উপদ্রব দেখা দেয়। সাধারণ জ্বর-ঠান্ডার পাশাপাশি ভয়াবহ যে সমস্যাটি সঙ্গে নিয়ে আসে সেটি হলো ডেঙ্গু। ডেঙ্গু এমনই ভয়ঙ্কর অসুখ যে অনেকসময় এটি প্রাণঘাতিও হতে পারে!

আমাদের দেশে প্রতি বছরই ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। আপনি মানুন আর নাই মানুন, এর সবচেয়ে বড় কারণ আমাদের অসচেতনতা আর উদাসীনতা। শুধু রাজধানী ঢাকায়ই নয়, শহরতলি, প্রত্যন্ত জেলা ও গ্রামগুলোও এই অসুখে ভুক্তভোগী। ডেঙ্গু নিয়ে প্রতি বছরই সরকারি নানা কর্মকাণ্ড ও জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ থাকলেও আমাদেরই উদাসিনতার কারণে এর প্রকোপ বাড়ছে।

সাধারণ মানুষ এর দায় ও সচেতনতায় অংশ না নিলে মশাবাহিত কোনো অসুখ থেকেই বাঁচা সম্ভব নয়। কিন্তু জমে থাকা পানি ও ময়লার স্তুপের পরিমাণ নেহায়েত কম নয়। ব্লিচিং বা কীটনাশক দিয়ে মশাকে কিছুটা প্রতিহত করতে পারলেও তার প্রভাব আধ-এক ঘণ্টার বেশি থাকে না। তাই যে সব জায়গায় মশা ডিম পাড়ে, সেই জায়গাগুলো ধ্বংস করাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আপনাকেই নিতে হবে কিছু পদক্ষেপ। চলুন জেনে নেয়া যাক-

১. ভাঙা টব ও পরিত্যক্ত টায়ার জমতে দেবেন না। এগুলো যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে ফেলুন।

২. নোংরা বা পরিষ্কার কোনোরকম পানিই জমে থাকতে দেবেন না। পানি যদি ধরে রাখার দরকার হয় তবে পানির বালতি ঢেকে রাখুন। বাড়ির চারপাশে যেন কোনোভাবেই পানি না জমতে পারে সেদিকে কড়া নজর রাখুন। প্রয়োজনে কর্পোরেশন, স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

৩. ডেঙ্গু মশা জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। আশপাশে থাকা ফুলের টব, ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ারে পানি যাতে না জমে লক্ষ্য রাখুন। এমনিই বর্ষাকালে রাস্তাঘাট ভিজে থাকে, এর মধ্যে এসব জায়গায় পানি জমে থাকলে তা বিপদ আরও বাড়াবে।

৪. জমে থাকা ইট, বালি-সিমেন্টের স্তূপ এসব মশা বসবাস করে। তাই আশপাশে একেবারেই এসব জমে থাকতে দেবেন না। একান্তই কোনো বাড়ি তৈরির পরিস্থিতি এলে ওই জায়গার চারপাশে নিয়মিত কীটনাশক ও মশা মারার স্প্রে দিন।

৫. মশা নিধনে ব্লিচিং, কীটনাশক বা তেলে ভরসা করুন, তবে তারচেয়েও বেশি জোর দিন আগাছা পরিষ্কারে।

৬. অন্তত বর্ষার সময়টা মশারির ভেতর ঘুমান। বাড়িতে শিশু থাকলেও বাড়ির চারপাশ অপরিষ্কার হলে অবশ্যই সারাদিন মশারি টাঙিয়ে রাখুন। এলাকায় কারও ডেঙ্গু হলেও এই উপায় অবশ্য পালনীয়। বর্ষার ক’দিন নেট লাগিয়ে রাখতে পারেন ঘরের জানালায়।

৭. বাইরে বের হলে চেষ্টা করুন ফুল হাতা পোশাক পরতে। রাসায়নিক দেওয়া মশা নিরোধক ক্রিম মাখানোর চেয়ে ঘরোয়া কিছু উপায়ে মশা দমন করুন। তবে ভেষজ কোনো কোনো ধূপেও মশা যায়। সেসব প্রয়োগ করতেই পারেন। বাড়িতে মশা নিরোধক তেল ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৮. একান্তই মশা মারার ওষুধ বা তেল ব্যবহার করলে তার উপাদান দেখে নিন। শরীরের জন্য তুলনামূলক কম ক্ষতিকর ওষুধ বা তেল কিনুন। মাঝে মাঝেই বদলে দিন ওষুধ। একই ওষুধ অনেকদিন ব্যবহার করলে মশা নিজের শরীরেও সেই প্রতিষেধকের বিপরীতে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ফেলে।

/আরকে 

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close