দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামস্বাস্থ্য

ডেঙ্গুর নতুন ধরন ডেনভি-৩ শনাক্ত, আক্রান্ত বেশি রাজধানীবাসী

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দেশে দিন দিনই বেড়ে চলছে। এ অবস্থার মধ্যেই রোগীদের শরীরে শনাক্ত হয়েছে ডেঙ্গুর নতুন একটি ধরন।

দেশে ডেনভি-৩ নামে ডেঙ্গু রোগের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। রাজধানীবাসী এই ধরনটির মাধ্যমে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) ২০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে এই তথ্য জানিয়েছে।

বিসিএসআইআরের আইএফআরডি অডিটোরিয়ামে রোববার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ডেঙ্গু ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান গবেষক ড. সেলিম খান।

এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সাইফুল্লাহ মুন্সি বলেন, দেশে প্রথম এই ধরন শনাক্ত হয় ২০১৭ সালে। ২০১৭ সালের আগে ডেনভি-১, ২-তে আক্রান্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে অনেকের। কিন্তু ডেনভি-৩ এর বিরুদ্ধে এই ক্ষমতা গড়ে ওঠেনি। যারা আগের দুই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত তারা নতুন করে ডেনভি-৩ আক্রান্ত হলে হেমোরেজ বা সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছে। তাই এবার মৃত্যু বেশি।

তিনি আরও বলেন, বিসিএসআইআরের এই সিকোয়েন্সিং ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়ক হবে। এবার ডেঙ্গুর ডেনভি-৩ ভ্যারিয়েন্টে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এটা ডেনভি-১,২ এর চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর।

লিখিত বক্তব্যে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আফতাব আলী শেখ বলেন, ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপ যা ডেনভি-১, ডেনভি-২, ডেনভি-৩ এবং ডেনভি-৪ এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

এই ভাইরাসের ৪টি সেরোটাইপের মধ্যে ৬৫-৭০ শতাংশ এমিনো এসিড সিকোয়েন্সের মিল আছে। ভাইরাসটি এডিস মশা দ্বারা বাহিত হয় এবং মশার মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়। ১৯৬০ সালে পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

আইইডিসিআরের গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৬ সালের আগে সেরোটাইপ ডেনভি-১ এবং ডেনভি-২ এর মাধ্যমে মহামারি সংঘটিত হয়, তখন পর্যন্ত বাংলাদেশে বাকি ২টি সেরোটাইপ শনাক্ত হয়নি। ২০১৭ সালে ডেনভি-৩ প্রথম শনাক্ত হয় এবং ২০১৮ সালে ডেনভি-৩ সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে এবং ২০১৯ সালে এটি মহামারি আকার ধারণ করে।

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মশকবাহিত রোগ হলো ডেঙ্গু। বর্তমানে প্রায় ৩.৬ বিলিয়ন মানুষ এর সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছে। ইতোমধ্যে এ রোগটি বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে বিস্তার লাভ করেছে। বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।

/ আর এইচ এস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close