বিশ্বজুড়ে

টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পেলো কাশ্মীরের জনগণ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ অবশেষে অন্তত সীমিত পরিসরে হলেও টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পেলো ভারতশাসিত কাশ্মীরের জনগণ। ভারত সরকার কর্তৃক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বাইরে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেন তারা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্যা প্রিন্ট ডট ইন’-এর বরাতে এ খবর জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন।

এতে বলা হয়েছে, শ্রীনগরে দুইটি টেলিফোন খুলে দেয়া হয়েছে বাইরে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ইমারজেন্সি কথা বলার জন্য। তবে এক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আছে ভারত সরকারের। আগেই তাদের জানাতে হচ্ছে, কারা কথা বলবে এবং কী কথা বলবে। এছাড়া বেশিরভাগ ফোনকলই মডারেট করা হচ্ছে এবং এক মিনিটের বেশি যাতে কথা বলতে না পারে সেই চেষ্টাই করছে অপরেটররা।

‘আমার মেয়ের এই সপ্তাহেই আসার কথা ছিল। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়ায় সে টিকিট কাটতে পারেনি। আমরা তার পথের পানে চেয়ে আছি। আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছি, চন্ডিগড়ে সে কেমন আছে, অথবা এই কারফিউয়ের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কিভাবে বাড়িতে ফিরবে তা নিয়ে।’ বলছিলেন ফেহমিদা নামে এক মা। তিনি শ্রীনগরের হাওয়াল এলাকায় বাস করেন।

ফেহমিদা বলেন, ‘আজ আমরা যখন তার সঙ্গে কথা বলতে পরলাম, সে জানালো আগামীকাল আসছে। সে বিমানবন্দর থেকে হেঁটে বাড়িতে ফেরার চিন্তা করেছিল। এখন আমরা তাকে এগিয়ে আনতে যেতে পারবো।’

ঈদুল আজহার ঠিক আগ মুহূর্তে কারফিউ জারি করা নিয়ে কাশ্মীরি পরিবারগুলোতে বিরাজ করছে আতঙ্ক। বাইরে অবস্থান করা সন্তানদের ঈদে বাড়ি ফিরতে নিষেধ করছেন অনেক বাবা-মা।

‘ব্যাঙ্গালুরুতে অবস্থান করা ছেলেকে ফোন করার জন্য আমার স্বামী যেতে চাচ্ছিল। কিন্তু আমি বলেছি, আমিই যাবো। কারণ, চেকপোস্টগুলোতে পুরুষদের চেয়ে নারীরা কম হেনস্তা হচ্ছে। আমি জওহার নগর থেকে হেঁটে গিয়ে ছেলের সঙ্গে কথা বলেছি। সে প্রথমে অনেক কান্নাকাটি করেছে। কিন্তু তারপরে আমি তাকে বলেছি, চিন্তা করো না, নিজের খেয়াল রেখো। আমি তাকে ঈদে বাড়ি ফিরতে নিষেধ করে দিয়েছি।’ কথাগুলো যিনি বলছিলেন তিনি নিজের নাম জানাননি। নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘মৌজা আখ’ বা ‘অনেক মায়ের মধ্যে একজন’।

প্রিন্ট ডট ইনের খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কথা বলার সুযোগ ছিল কাশ্মীরিদের। কিন্তু অনেকেই সরকারি অফিসে পৌঁছাতে পারেননি যেখান থেকে কথা বলার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

আঞ্জুম নামে এক নারী ওই অফিসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিকেল ৫টার কিছু দেরি হয়ে যায়। আর তাই তাকে তার মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে দেয়া হয়নি। বিকেলের দিকে অনেক নারীকেই কথা বলতে দেয়া হয়নি। কারণ, অফিস থেকে জানানো হয়, নারীদের শরীর চেক করার জন্য ওই শিফটে কোনো নারী কর্মী নেই।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close