কৃষিশিল্প-বানিজ্য
টানা বৃষ্টিতে সবজির বাজার ‘গরম’
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ হেমন্তের শুরুতে টানা বৃষ্টিতে ঠাণ্ডা অনুভূত হলেও সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে ঢাকার কাঁচাবাজারে সবজির দাম চড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের মাঝামাঝি সময় থেকে কমতে শুরু করেছিল মওসুমের নতুন শাক-সবজির দাম। তবে সপ্তাহের শেষ দিকে এসে টানা বৃষ্টিতে দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে।
তাদের ভাষ্য মতে, সবজির দামের এই বৃদ্ধি ‘সাময়িক’। বৃষ্টি-বাদল কমলেই দাম কমে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে গত বুধবার থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এমন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শনিবার পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ঝিঙা ও পটলের কেজি ৫০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ধুন্দল ও ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, মুলা ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে রাজধানীর মিরপুরের বড়বাগে এসব পণ্য কেজিতে অন্তত ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। বড়বাগে চিচিঙ্গা, বেগুন ও ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, মুলা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নতুন করে আসতে শুরু করেছে দেশি গাজর। ফলে এতদিন ধরে প্রতিকেজি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া আমদানি করা গাজরের দামও কমতে শুরু করেছে।
এদিন কারওয়ান বাজারে দেশি গাজর ৫০ টাকা এবং চীনা গাজর ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
কারওয়ান বাজারে সবজি বিক্রেতা বলেন, চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝিতে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা করে কমে গিয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে দাম আবার বেড়ে যায়।
“বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। সেই কারণে দামও কিছুটা বেড়ে গেছে। সবজির বাজারে দামের উঠানামা সব সময় চলে। সরবরাহ একটু কমে গেলেই দাম বেড়ে যায়। আবার সরবরাহ বাড়ার কারণে একদিনেই দাম পড়ে যায়।”
আরেক বিক্রেতা শিপন বলেন, গত তিন দিন ধরে মওসুমের নতুন সবজি মুলার পাইকারি মূল্য ছিল প্রতি কেজি ২০ টাকা। গত রাতে কারওয়ান বাজারে মুলার পাইকারি মূল্য বেড়ে গিয়ে ৩০ টাকায় পৌঁছে। ফলে বৃহস্পতিবার খুচরায় মুলার দাম ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা।
মুলার মতোই ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, বরবটি ও বেগুনের দাম গত সপ্তাহের মাঝামাঝিতে কমে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।
মাঝারি আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটির দাম ৩০ টাকা থেকে কমে ২০ টাকায় নেমেছিল। তবে এখন তা আবার বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
গত সপ্তাহে কাচা মরিচ বিক্রি হচ্ছিল প্রতি কেজি ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। এই সপ্তাহে দাম বেড়ে গিয়ে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায়।
বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত আছে; গত এক সপ্তাহে মুদি দোকানগুলোতে পেঁয়াজের খুচরা মূল্য কেজিতে অন্তত ১০ টাকা করে বেড়েছে। গত সপ্তাহে ভালো মানের যেসব পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল এই সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
তবে আমদানি করা রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে প্রতিকেজি ১৩০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।
লেয়ার মুরগি ও ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহে এক ধাপ বেড়েছিল। চলতি সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে সোনালী মুরগির দাম।
কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পাকিস্তানি মুরগি হিসাবে পরিচিত সোনলী জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৪০ টাকায়।
বাজারে মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, দামও গত সপ্তাহের মতোই।
বড়বাগে ছোট আকারের পাবদা মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, রূপ চাঁদা মাছ ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ১৩০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চাষের রুই মাছ প্রতি কেজি ২৫০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা, কাতল মাছের কেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
/আরএম