আমদানি-রপ্তানীশিল্প-বানিজ্য
জ্বালানি তেল সরবরাহে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পাইপলাইন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ দেশের উত্তরাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও সহজ পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যৌথভাবে পাইপলাইন নির্মাণ করবে সরকার। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বার্ষিক ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আনা সম্ভব হবে।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৭৫ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রয়েছে। এখানে জ্বালানি তেল সরবরাহসহ উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
বিপিসি সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় আসামের নুমালীগড় শোধনাগার থেকে বাংলাদেশে ডিজেল আনার জন্য পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপনের কাজ করবে সরকার। শিলিগুড়ির মার্কেটিং টার্মিনাল (এসএমটি) থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত ১০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি পাইপ লাইন নির্মিত হবে। এর মধ্যে ভারতের অংশ ৫ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশের অংশ ১২৫ কিলোমিটার।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ জন্য ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা উন্নয়ন’ প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে বিপিসি। প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ৩০৮ কোটি ৫৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে এটি বাস্তবায়িত হবে।
বিপিসি সূত্র জানায়, পাইপলাইন নির্মাণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অংশে পঞ্চগড়, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলায় ১৯৯ দশমিক ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ, ১৩৪ দশমিক ১২ একর হুকুম দখল এবং তেল সংরক্ষণের জন্য পার্বতীপুরে ৬টি ট্যাংক নির্মাণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সৈয়দপুরে ৭৫ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। দেশে প্রতিনিয়তই বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। অদূর ভবিষ্যতে ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বার্ষিক প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল প্রয়োজন হবে।
তাই বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে তেল পাইপলাইন নির্মাণ করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ শুধু মাত্র ভূমি অধিগ্রহণ কাজ করবে। বাকি পাইপলাইন নির্মাণের কাজ করবে ভারত। ভারতীয় অনুদানে নির্মিত হবে ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন।
এ প্রসঙ্গে বিপিসির ব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রকৌশলী মোহাম্মদ আপেল মামুন সংবাদমাধ্যমে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পাইপলাইন নির্মাণে আমাদের শুধু জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ইতোমধেই ডিসি অফিসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পরে জমির মালিকদের মতামত নেওয়া হবে। জমি অধিগ্রহণ হয়ে গেলে পাইপলাইন নির্মাণে আর সমস্যা থাকবে না।
তিনি বলেন, তেল পাইপলাইন নির্মাণের অন্যতম উদ্দেশ্য দুই দেশের বন্ধুত্ব সম্পর্কে আরও দৃঢ় করা। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে উত্তরবঙ্গে জ্বালানি পৌঁছানো অনেক সময় সাপেক্ষ। রয়েছে সিস্টেম ও অপারেশন লস। ভারত থেকে তেল আমদানি করতে পারলে এই লস হবে না। প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে।