দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামবিশেষ প্রতিবেদন
জীবন বাজি রেখে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সংরক্ষণ করেছিলেন আমজাদ আলী
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষন পাকহানাদার বাহিনীর তোপে সংরক্ষন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তবে সেই ভিডিও চিত্র সঙ্গে নিয়ে জীবন বাজি রেখে সংরক্ষণের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়িয়ে এক ব্যক্তি। সেদিনের সেই সাহসীকতায় আজ পুরো বিশ্বে প্রচারিত হচ্ছে ঐতিহাসিক সে ভাষন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। রেসক্রোস ময়দানে শেখ মজিবর রহমানের ভাষন। সেই ভাষন ভিডিও চিত্র করা দায়িত্ব পড়ে ততকালীন ফিল্ম ডিভিশনে কর্মরত আমজান আলী খন্দাকারের। দুই ক্যামেরায় চারজনের দায়িত্ব। খবর উঠেছিল সেই ভাষনে বোমা মেরে উড়িয়ে দেবে পাক হানাদার বাহিনী। সবার মত পিছু হটেনি তারাও। কারন এই ভাষন মাধ্যমে দেশে স্বাধীনতার সুপ্ত ছিল। জোড়ালো প্রচার ছাড়াই দেশের সব মানুষ একত্রিত হয়েছিল। ঐতিহাসিক ভাষনের ভিডিও চিত্রটি ততকালিন ফিম্ম ডিভিশনে সংরক্ষন করা হয়েছিল। কিন্তু ২৫ মার্চের মধ্যে দিয়ে হানাদার বাহিনী পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। দেশের সব স্মৃতি ধ্বংস করে দিতে শুরু করে ও সব দায়িত্ব থেকে বাঙ্গালীর বের করে দিতে শুরু। সে সময় আমরা কয়েকজন ভাষনটি সংরক্ষনের জন্য চেষ্ঠা করি। ফিম্ম ডিভিশন থেকে এক বাঙ্গালীর সহায়তায় ভাষনের রিলগুলো বের করি। সদরঘাট থেকে একটি ৪২ ইঞ্চি ট্রাঙ্ক ভিতরে শেখ মজিবরের ছবি ও ভাষনের রিল ও কাজী নজরুল ইসলামের কিছু সংরক্ষিত জিনিস নিয়ে পালিয়ে গেলাম। পরিবারকে বলেছিলাম বিদেশ যাচ্ছি কবে ফিরব জানি না। প্রথমে ঢাকার দোহার পৌছে। সেখান থেকে আরও নিরাপদ স্থানে জয়পাড়া গ্রামে মজিদ দারাগোর পরিচিত একজনের বাড়িতে আশ্রয় নেই। সেখান থেকে আবার চরকোসাই গ্রামে ওমেত খা নামে বাড়িতে ধানের গোলায় এভাবেই সংরক্ষিত হয় ৭ মার্চের ঐতিহাসিক সে ভাষন।
অবশ্য এই ৭ মার্চের ভাষন ও সংরক্ষনের খবর পরিবার ২০০৪ সালে পরে জানতে পারেন। কারন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ভয়ে নিজেকে আড়াল করেছিলেন। যাতে করে পরিবার কোন নিরাপত্তহীনতায় না থাকে।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে গ্রামের বাড়ি হলেও বর্তমানে তিনি অসুস্থ অবস্থায় সাভারে গেন্ডায় এলাকায় পরিবার ও সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। চাকরি জীবন শেষ করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের চীফ ক্যামেরাম্যান হিসেবে দায়িত্ব শেষ করেছেন। তবে দেশ ও সরকারে প্রতি কোন কিছু চাওয়া নেই। শুধু এই কাজের মূল্যায়ন ও আন্তরিকতার কথাই অনুরোধ করেন। কারন আলোচিত ঘটনার সংরক্ষক এই ব্যক্তি দুই একটি গণমাধ্যমে প্রতিবেন ছাপা ছাড়া আর কোন মহলের ব্যক্তিবর্গই খবর নেয়নি।
/এন এইচ