শিক্ষা-সাহিত্য

জাবিতে তৃতীয় দি‌নের মত অব‌রোধ

আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অধীনে আলোচনায় বসতে নারাজ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক পক্ষের প্রশাসনিক ভবন অবরোধের আজ তৃতীয় দিন।

বৃহস্পতিবার(০৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে সাতটায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন তারা। টানা তৃতীয় দিনের অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা চলছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তিনি আজ বৃহস্পতিবার আন্দোলনরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলার চেষ্টা করবেন। উপাচার্য বলেন, ‘আন্দোলনরতরা যে তিনটি দাবি করেছে তিনটিই অনেক কঠিন দাবি। উভয়পক্ষকেই কিছু ছাড় দিতে হবে। আশা করি, দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটা সুন্দর সমাধান আসবে।’

তবে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অধীনে আলোচনায় বসতে নারাজ। আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘যেহেতু উপাচার্য নিজেই অভিযুক্ত তাই তাকে নির্বাহী প্রধান করে আমরা কোনও আলোচনায় বসতে পারি না। রাষ্ট্রপক্ষের কোনও প্রতিনিধি আলোচনায় নির্বাহী প্রধান হলে আমরা আলোচনায় বসবো। সেটা হতে পারে আচার্যের কোনও প্রতিনিধি, ইউজিসির সদস্য অথবা মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তি।’

এর আগে, বুধবার অবরোধ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে দু’জন উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা দু’দফায় আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলেন। দুই পক্ষের মধ্যে মতের মিল না হওয়ায় আলোচনার চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের জন্য গত বছরের ২৩ অক্টোবর ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)। এই প্রকল্পের প্রথম ধাপে ছয়টি আবাসিক হল নির্মাণের জন্য গত ১ মে টেন্ডার আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হলগুলো নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এদিকে, নির্মাণকাজ বাধাহীনভাবে সম্পন্ন করতে গত ৯ আগস্ট উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এর আগে, গত ২৩ মে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টেন্ডার শিডিউল ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এছাড়া নির্মিতব্য হলগুলোর জন্য নির্বাচিত স্থানগুলোতে ১১শ’র অধিক গাছ কাটার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি গাছ কাটা পড়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রকল্প বাস্তবায়নে যে মাস্টারপ্ল্যান অনুসরণ করা হচ্ছে তা অপরিকল্পিত-অস্বচ্ছ।

প্রকল্পে দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্ত, তিনটি ছাত্র হলের বিকল্প স্থান নির্বাচন এবং অস্বচ্ছতা দূর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’এর ব্যানারে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close