গার্মেন্টসপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
জানুয়ারিতে রেকর্ড রপ্তানি আয়!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: স্থগিত এবং আটকে পড়া অর্ডার বিদেশি ক্রেতারা আবারও নিতে শুরু করায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প। গত বছরের শেষ চার মাস স্থবিরতার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি আয় রেকর্ড ছুঁয়েছে, যার পরিমাণ ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।
গেলো মাসে ২৪৩ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে ঢাকা জোনের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। গত বছরের নভেম্বর মাসের তুলনায় যা ১৩১ শতাংশ বেশি। অথচ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বমন্দার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই এ খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমতে খাকে।
গত বছরের জানুয়ারিতে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৩৫ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর থেকেই বিদেশি অর্ডার কমতে থাকে। মন্দা কাটিয়ে বিশ্ববাজারের আসন্ন ফল, স্প্রিং ও সামার মৌসুমের অর্ডার পেতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, পণ্য সংকটের কারণে চাহিদা বাড়ায় আগামী তিন মাসের অর্ডার এক সঙ্গে পাওয়া গেছে। যার ফলে চলতি বছরের জানুয়ারিতে কাঁচামালের আমদানি বেড়েছে।
এদিকে গার্মেন্টস খাতের রপ্তানি আয়ে ঢাকা জোনের চেয়ে চট্টগ্রাম জোনের আয় সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ জোন থেকে ডিসেম্বর মাসে রফতানি আয় দাঁড়ায় ৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার।
তবে জানুয়ারিতে ২৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে আয় হয়েছে ১৮ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার। মূলত ফল সিজনে টি শার্ট, প্যান্ট এবং জগারের মতো ফ্যাশনাবল সামগ্রীর চাহিদা বাড়ায় গার্মেন্টস শিল্পে স্থবিরতার জট খুলছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, আন্তর্জাতিক চাহিদা না বাড়া পর্যন্ত স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।
আর বিজিএমইএর বর্তমান প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, গতানুগতিক বাজার থেকে বেরিয়ে এসে কোনো রকমে ব্যবসা চালু রাখার জন্য বিকল্প প্রজেক্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। সেজন্য উৎপাদকরা কারখানা চালু করার জন্য যেসব কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়েই কাজ শুরু করছেন।
এদিকে গত বছরের শেষ ৪ মাসে গার্মেন্টস সেক্টরে বিরাজমান স্থবিরতার প্রভাব এসে পড়ে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গার্মেন্টস সেক্টরে অর্ডার বাড়তে থাকায় কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে চট্টগ্রামের ১৯টি অফডকে। গার্মেন্টস পণ্য রফতানির আগে জাহাজিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে এ অফডকগুলোতেই।
এছাড়া ঢাকা এবং চট্টগ্রাম জোনের গার্মেন্টস ছাড়াও প্রবৃদ্ধিতে এগিয়েছে দেশের সরকারি ৮টি ইপিজেডের গার্মেন্টস এবং বিকেএমইএ সদস্যভুক্ত কারখানাগুলো।
আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে অর্ডারের পরিমাণ বাড়ছে জানিয়ে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, অর্ডার বাড়তে থাকায় আগামী মাসগুলোতে রফতানির পরিমাণ বাড়বে।
২০২২ সালে ৪৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। আর ২০২১ সালে এ খাতে রফতানি আয় হয় ৩৫.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।