প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে
জরুরি ব্যবহারের জন্য ভ্যাকসিন প্রস্তুত হতে পারেঃ চীনা বিশেষজ্ঞ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চীন নভেল (কোভিড ১৯) করোনার একটি ভ্যাকসিন জরুরি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির শীর্ষ রেসপিরেটরি বিশেষজ্ঞ ঝং ন্যানশান। স্থানীয় সময় সোমবার চীনের সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট বাইডুর এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। গত মাসে চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের প্রধান গ্যাও ফু-ও একই ধরনের আশার বাণী শুনিয়েছিলেন; এবার তার সঙ্গে সুর মেলালেন আরেক বিশেষজ্ঞ ন্যানশান।
গ্যাও ফু বলেছিলেন, ভ্যাকসিনটি কারা আগে পাবেন; কখন পাবেন সেবিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করছে চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন। জরুরি মুহূর্তে ব্যবহারের জন্য কি ধরনের বিষয় গুরুত্ব পাবে সেবিষয়ে কাজ করছে চীনা এই সরকারি সংস্থা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের প্রধান অ্যান্থনি ফওসি-ও একই ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তিনি বলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই চলতি বছরের শেষের দিকে ১০০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন প্রস্তত করা হতে পারে।
চীনা বিশেষজ্ঞ ঝং ন্যানশান বলেছেন, কোনও ধরনের প্রতিরোধ না থাকলে ব্যাপক মৃত্যু ছাড়া হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা সম্ভব নয়। হার্ড ইমিউনিটি অর্জন টিকা আসা ছাড়া চিন্তা করা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক ইমিউনিটি অর্জনের জন্য একটি দেশের কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষকে নভেল করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে হবে। আর এটি হলে ৩ থেকে ৪ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। এখনও এর একমাত্র সমাধান গণহারে ভ্যাকসিন প্রয়োগ।
ঝং ন্যানশান বলেন, হার্ড ইমিউনিটি এখনও ভ্যাকসিন তৈরির ওপর নির্ভর করছে। তবে বৃহৎ পরিসরে গণহারে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ করতে এক থেকে দুই বছর সময়ের দরকার হবে। তবে নতুন একটি ভ্যাকসিন জরুরি ব্যবহারের জন্য চলতি বছরের শেষের দিকে অথবা এই শরতের শুরুর দিকে পাওয়া যেতে পারে।
রোববার চীন সরকার করোনাভাইরাস নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, চীনা বিজ্ঞানীরা বর্তমানে পাঁচটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করছেন। এগুলো প্রথম ধাপ সফলতার সঙ্গে উতড়ে এখন দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় রয়েছে।
এর মধ্যে শনিবার বিজ্ঞান সাময়িকী সেলে বেইজিং ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টসের একটি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ম্যাকাকু প্রজাতির বানরের দেহে ভ্যাকসিনটি সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া বানরের দেহে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে।
সেলে প্রকাশিত নিবন্ধে চীনা গবেষকরা বলেছেন, ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের দ্বিতীয় দিনেই ম্যাকাকু প্রজাতির বানরটির দেহে ইমিউনিটি গড়ে উঠতে শুরু করে। প্রথম দিনের শূন্য থেকে ১৪ দিনে গিয়ে বানরের দেহের ইমিউনিটি দ্বিগুণ হয়। অন্য একদল ম্যাকাকু বানরকে প্ল্যাসাবো গ্রুপ দেয়া হয়। ২৪তম দিনে গিয়ে সব বানরকেই করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে নেয়া হয়।
যে গ্রুপটিকে ভ্যাকসিনটি দেয়া হয়নি; তাদের দেহে সপ্তম দিনে গিয়ে ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ ধরা পড়ে।অন্যদিকে, ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত গ্রুপের সোয়াবে পঞ্চম দিনে ভাইরাল লোড চূড়ায় পৌঁছালেও সপ্তম দিনে গিয়ে একেবারে কমে যায়। সূত্রঃ সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
/এন এইচ