দেশজুড়ে
ছয় মেয়ের বাধায় দুদিন পরে বাবার লাশ দাফন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুই পরিবারের সন্তানদের মাঝে সম্পত্তির বিরোধে ছয় মেয়ের বাধা দেয়া সেই বাবার লাশ অবশেষে দাফন হয়েছে। মৃত্যুর দুইদিন পর মঙ্গলবার রাত ১০টায় তার দাফন করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের কবরুয়া গ্রামে। মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মো. নুরুল হক ভূঁইয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ভোরে নুরুল হক ভূঁইয়া তার নিজ ঘরে ব্রেন স্ট্রোক করলে পরিবারের লোকজন তাকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার সেখানে তার মৃত্যু হয়। লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলে তার দুই পরিবারের সন্তানরা সম্পত্তি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে লাশ দাফনে বাধা দেয়।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নুরুল হক ভূঁইয়া প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের কাগাইশ গ্রামের মজুমদার বাড়ির আয়েশা আক্তারকে বিয়ে করেন। নুরুল হক-আয়েশা দম্পতির সংসারে ছয় মেয়ে সন্তান রয়েছে।
চট্টগ্রাম স্টিল মিলে চাকরির সুবাদে সুরমা আক্তার নামে সন্দীপের আরেক নারীকে বিয়ে করেন নুরুল হক ভূঁইয়া।দ্বিতীয় সংসারেও দুই ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে। তিনি নতুন বাড়ি করে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা নুরুল হক ভুঁইয়া থেকে ১৪০ শতক জমি কবলা করে তাদের নামে নিয়ে নেন। পরে নুরুল হক ভুঁইয়ার প্রথম স্ত্রী বাদী হয়ে সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা দাবি করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করে।
স্থানীয়ভাবে বিষয়টির নিস্পত্তি করা হলেও বাড়িতে এসে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা আবারো সম্পত্তি থেকে তাদের বঞ্চিত রাখে। সমস্যা সমাধান করার আগে নুরুল হক ভুঁইয়া সোমবার সকালে মৃত্যু হলে তার সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে লাশ দাফনে বাধা প্রদান করে প্রথম স্ত্রীর ছয় মেয়ে। এ সময় দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা প্রথম স্ত্রীর মেয়েদেরকে সম্পত্তি দিতে অস্বীকার করে। প্রবাস থেকে দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে নুরুল আফছার মোবাইল ফোনে গ্রামবাসীকে বলেন, বাবার লাশ দাফনের দরকার নেই, আমরা কাউকে এক শতক সম্পত্তিও দেব না।
এ বিষয়ে বুধবার চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবার লাশ দাফনে বাধা দেয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দ্বিতীয় পক্ষ ছাড় দিলে এত সমস্যা হতো না। ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পরিবার ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সালিশের মাধ্যমে সমাধান করা হয়। ছয় মেয়েকে ১৪ শতক জমি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার রাত ১০টায় পুলিশ উপস্থিত থেকে জানাযার ব্যবস্থা করে।
/আরএম